...

অশুভ ছায়া

 

সম্পূর্ণ পর্ব

#লেখক_আনোয়ার_হোসেন

মিঠু প্রতিদিনের মতো রাতে খাওয়াদাওয়া করে,এলাকার সমবয়সী ছেলেদের সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য রাস্তায় বেড়িয়ে পরে। পুরো এলাকাটি একটা গ্রাম। মিঠুর সাথে আড্ডায় যোগ দেয়,খালেদ ও সবুজ। তারা তিনজনে রাস্তায় হাটতেছে। তখন রাত প্রায় নয়টা বাজে। তিনজনেই গল্প করছে আর হাটতেছে,তাদের গন্তব্য সামনের মোড়ে। সেখানে বসে চা পান করবে,আর সোজা গল্প করতে করতে বাড়ি চলে আসবে। চা পান করা শেষে তারা বাড়ির উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরে। খালেদ ও সবুজ দুজনে দুইটা সিগারেট ধরিয়ে টানতে থাকে।

🚭ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর 🚭

 

মিঠু আবার সিগারেট খায় না। সে ছোটবেলা একবার সিগারেট ধরিয়ে একটা টান দিতেই তার অনেক কাশি এসেছিল। তার কাছে এটা খুবই জঘন্য লাগে। তিনজনে আলাপ করতে করতে অনেকটা পথ চলে আসে। খালেদ বলে দোস্ত জীবনে অনেক ভূতের ঘঠনা শুনেছি আজ পর্যন্ত একটা ভূতও দেখলাম না। মিঠু বলে তোর শুধু ভূতের গল্প। কেন রে?তোর মুখে কি ভূত ছাড়া আর কিছু আসে না। কোথায় একটু তোদের গার্লফ্রেন্ড এর বিষয়ে কথা বলবি ,তা না। শুধু ভূত নিয়ে পরে আছিস!

 

সবুজ বলে তুই কবে যে নিজেই সত্যি কারের ভূতের দেখা পাস কে জানে। মিঠু বলে আরে বাদ দে তো এসব। রাতের বেলা এসব ভূতের কথা শুনতে ভালো লাগে না। খালেদ বলে দোস্ত তুই তো দেখছি ভিতু। মিঠু বলে বেটা তুই নিজেও তো একটা ভিতু। সবুজ দুজনকে থামিয়ে বলতে থাকে,তোরা কি শুরু করলি,নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করবি নাকি? মিঠু বলে দেখ ভাই ঝগড়া করার ইচ্ছা আমার নেই। তুই খালেদ কে বল,ও যেন সবসময় ভূত ভূত না করে। এভাবেই কিছুক্ষণ চলে তাদের দুজনের তর্ক বিতর্ক। একসময় তিনজন তিনদিকে চলে যায়। মিঠু হাটছে। আরেকটু পথ হাঁটলেই মিঠুর বাড়ি।

 

মিঠুর বাড়িতে প্রবেশ করার আগে একটা গাছগাছালির ঝোপঝাড় পরে।সেই ঝোপঝাড় পর্যন্ত যেতেই মিঠু খেয়াল করে তাকে পেছন থেকে কে যেন ঢিল ছুড়ে মারে। মিঠু রেগে পেছন ফিরে তাকায়। পেছনে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই। সে ভাবে হয়তো খালেদ তাকে ভয় দেখাচ্ছে। তাই মিঠু কিছু মনে করে না। সেই ঝোপঝাড়টি পার হয়ে বাড়ির সামনেই চলে আসে। এখন শুধু সামনের তেতুল গাছটা পেরুলেই তার বাড়ি। মিঠু দেখে তেতুল গাছটির নিচে বিরাট এক ছায়া। ছায়াটি তেতুল গাছেরই। তবে মনে হচ্ছে তেতুল গাছের চেয়েও কিছুটা বড় লাগছে।

 

তেতুল গাছটির কাছে আসতেই। গাছের নিচে একটি ছায়া দেখা গেল। মনে হচ্ছে কেউ বা কিছু একটা তেতুল গাছের মগডালে বসে আছে।আর সেটির ছায়া নিচে এসে পরেছে। মিঠু আসলে এমনিতে অনেক ভিতু। তার উপর এতো রাতে তেতুল গাছের নিচে বিশাল এক ছায়া দেখে সত্যিই ভয় পেয়ে যায়। ছায়াটিও কেমন যেন নড়াচড়া করছে। মিঠু ভয় পেয়ে তারাতারি বাড়িতে চলে আসে। বাড়ির উঠোন থেকেও সেই তেতুল গাছের ছায়াটি দেখা যাচ্ছে। মিঠু প্রতিদিনের মতো শুয়ে ঘুমিয়ে পরে।

 

হঠাৎ মিঠুর ঘুম ভেঙ্গে যায়।সে বিছানা ছেড়ে উঠে। সুইচ টিপতেই সে বুজতে পারে বিদ্ুৎ নেই। এই ্্্্ যা বিদ্ুৎ যাওয়ারও আর সময় পেলো না। অন্ধকারে সে ফোনের টর্চ অন করে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। চাঁদের আলো তে পুরো বাড়িটি হালকা মতো আলোকিত হয়ে আছে। মিঠু ওয়াশরুম থেকে ফেরার পথে খেয়াল করে সেই তেতুল গাছের ছায়াটি এখন তাদের বাড়ির উঠোনে এসে পরেছে। সে এটাও খেয়াল করে যে,তেতুল গাছের ছায়ার সাথে আরো কিছু একটার ছায়া দেখা যাচ্ছে।

 

সেই ছায়াটি দেখতে কিছু টা মানুষের অবয়বের মতো। এখন তো ছায়াটি উঠোন পেরিয়ে তাদের ঘর অবদি চলে এসেছে। মিঠু কিছুক্ষণ তেতুল গাছটির দিকে তাকিয়ে থেকে রুমে চলে আসে। কিছুক্ষণ পর পাশের বাড়িতে অনেক হৈ হুল্লুর শুরু হয়। মিঠু আবারো উঠে পরে। তার মা বাবা সবাই ঘুম থেকে উঠে পরে। সবাই পাশের বাড়িতে যায়। গিয়ে দেখে,পাশের বাড়িতে অনেক মানুষের ভিড়। এতো রাতের বেলা ,সবাই কি করছে এখানে! মিঠু ভিড় ঠেলে সামনে এগোতেই দেখতে পায়,সেখানে খালেদ দাড়িয়ে আছে।

 

মিঠুন সেই বাড়ির একজনকে জিগ্যেস করে, কি হয়েছে আপনাদের এখানে?সেই বাড়ির একজন বলতে থাকে,এই মাঝরাতে কিছুক্ষণ পূর্বে তাদের বাড়ির মেয়েটি ওয়াশরুম থেকে ঘরে ফিরার সময় অদ্ভুত ভঙ্গিতে হাসতে থাকে। আর মাটিতে গড়াগড়ি করতে থাকে। মিঠু দেখে মেয়েটি তখনও হেসেই চলছে। মাটিতে শুয়ে বসে যেভাবেই পারছে হাসছে। মেয়েটির মা অনেক চিন্তিত হয়ে পরে। তারা সবাই মেয়েটির কাছে যেতে চাইলে মেয়েটি ভয় দেখিয়ে বলতে থাকে সাবধান! কেউ আমার কাছে আসবি না। যদি কেউ আমার কাছে আসিস তো ঘাড় মটকে দেবো। মেয়েটিকে অনেকটা অদ্ভুত লাগছিল।

 

তাই ভয়ে কেউ মেয়েটির কাছে যেতে সাহস পাচ্ছে না। মেয়েটি পাগলের মতো হেসেই যাচ্ছে। তার বাবা মা অনেক কষ্টের পর মেয়েটিকে ধরে ঘরে নিয়ে যায়। পরিদন সকালে মিঠু সেই বাড়িতে গেলে দেখতে পায় মেয়েটি বসে আছে। আজ সে খুবই স্বাভাবিক দেখতে। মিঠু মেয়েটিকে জিগ্যেস করে, কিরে তুই রাতে এমন করছিলি কেন? তোর কি হয়েছিল? মেয়েটি কোন উত্তর দেয় না। মিঠু সেখান থেকে চলে যায়। রাস্তায় যেতেই সবুজের সাথে দেখা। সবুজ জিগ্যেস করে দোস্ত গতকাল রাতে নাকি তোর পাশের বাড়ির মেয়েটিকে জ্বিনে ধরেছিল? মিঠু বলে জ্বিন ধরেছিল কিনা তা জানিনা। তবে মেয়েটি গতরাতে কিছুটা অস্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল। অস্বাভাবিক ছিল তার আচরন।

 

তারা দুজনে দেখে খালেদ আসতেছে। খালেদকে সাথে নিয়ে তারা তিনজন আজও বাজারে চলে যায়। বাজারে অনেকসময় আড্ডা দেয়। একটা সময় তারা বাড়িতে ফিরে আসে। সেদিন মিঠুর বাড়িতে মেহমান আসে। রাতে তার ঘরে মেহমানদেরকে থাকতে বলা হয়। মিঠুর ঘরে যদি মেহমানরা থাকে,তাহলে সে কোথায় থাকবে। তার মা বলে বাবা তুই আজ পাশের খালি ঘরটিতেই থাক। মানে মিঠুর বাড়িতে একটি পরিত্যক্ত ঘর আছে। যে ঘরটিতে কেউ থাকে না। সে কি আর করবে। সেই রাতে সে পাশের সেই খালি ঘরটিতে থাকবে বলে সবকিছু গুছিয়ে পরিষ্কার করে রাখে।

 

সন্ধ্যা বেলা মিঠু রাস্তায় বের হয়। খালেদও আসে। তারা দুজনে রাস্তায় হেটে অনেক গল্প করে। সন্ধ্যা হয়ে এলো প্রায়।তারা দুজন দেখে রাস্তা দিয়ে একটা বৃদ্ধ লোক হেটে যাচ্ছে। লোকটির বয়স বেশি হওয়ার কারনে ধীরে ধীরে হাটছে। একসময় লোকটি তাদের কাছে এসে থামে। তারা দুজনেই বৃদ্ধ লোকটির দিকে ফিরে তাকায়। লোকটি জিগ্যেস করে বাবা তোমরা কি এই এলাকার? খালেদ বলে হ্যাঁ চাচা আমরা এই এলাকার। কিন্তু কেন? সেই বৃদ্ধ লোকটি বলে তোমাদের বাড়ি কি এখানেই? মিঠু বলে হ্যাঁ এখানেই।

 

❌গল্পটি কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ❌

কিছু কথা: আমি অঙ্গিকার করছি,বা কথা দিচ্ছি কোনোভাবেই আমি এই গল্প টি ভৌতিক গল্পের এডমিনের অনুমতি ছাড়া কপি করে,কোনোভাবেই কোনো পেইজ,বা কোনো গ্রুপে পোস্ট করব না। যদি আমি ভালোঘরের সন্তান হয়ে থাকি তাহলে এডমিনের অনুমতি না নিয়ে কখনোই গল্পটি কোথাও কপি পোস্ট করবো না। যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গল্প বা ছবি কোথাও পোষ্ট করবে, নিঃসন্দেহে সে অমানুষ।(যারা গল্প কপি করে লেখকের নাম কেটে কোথাও পোষ্ট করে, কথাগুলো শুধুমাত্র তাদের জন্য প্রযোজ্য।) তাই কিছু মনে করবেন না।

 

লোকটি বলে এই যে তেতুল গাছটি দেখতে পাচ্ছো!সেদিন আমি অনেক রাত করে এই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। তখন আমার চোখ যায় এই তেতুল গাছটির উপর। মিঠু ও খালেদ মনোযোগ দিয়ে লোকটির কথা শুনছে। লোকটি বলে, আমি এখানে আসতেই দেখি তেতুল গাছের নিচে বিরাট একটা ছায়া নড়াচড়া করছে। আমি প্রথমে কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। পরে তেতুল গাছটির দিকে তাকালে দেখি বিরাট বড় একটা কি যেন ভয়ানক দেখতে,সেটা তেতুল গাছের একেবারে উপরে বসে আছে। আমি তো সেটা দেখে খুবই ভয় পায়।

 

বয়স্ক মানুষ। বুঝোই তো বাবা,দৌড়াতে পারি না। ভয়ে ভয়ে আমি দোয়া দুরুদ পড়তে পড়তে এই জায়গাটা পার হয়েছিলাম। চাচার মুখে এসব কথা শুনে মিঠু কিছুটা অবাক হলেও,খালেদ ভাবে লোকটি হয়তো পাগল। মিঠু চুপ করে আছে। লোকটি এক সময় কাশি দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। খালেদ বিষয়টি নিয়ে হাসাহাসি করলেও মিঠু বিষয়টা নিয়ে চিন্তিত। খালেদকে বিদায় জানিয়ে সে বাড়িতে চলে আসে।বৃদ্ধ লোকেরর কথা গুলো বারবার ভাবাচ্ছে তাকে।এক সময় সন্ধা নেমে আসে।

 

মেহমানদের জন্য তার মা পিঠা বানাচ্ছে। মিটু উঠোনে একটি চেয়ারে বসে আছে। রাত তখন আনুমানিক আটটা বাজে। মিঠু খেয়াল করে আজও আকাশে চাঁদ উঠেছে। তাদের বাড়ির পুরো উঠোন জুরে আলোকিত হয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো উঠোন সেই তেতুল গাছের ছায়া এসে পরে। মিঠু দেখে গাছের ছায়ার মধ্যে কিছু একটার ছায়া দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে তেতুল গাছে কিছু একটা বসে আছে। আচমকাই সেখানে থাকা তেতুল গাছের ডালপালা গুলো নড়তে শুরু করে। অথচ আশে পাশে কোনো বাতাস নেই। তাহলে তেতুল গাছের ডালপালা কিভাবে নড়ছে।

 

মিঠু দেখে গাছের ছায়া টি আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে। সাথে সাথে সেখানে থাকে সবাই তেতুল গাছটির দিকে তাকায়।সবাই দেখে তেতুল গাছের ডালগুলো মানে এই রেতের বেলা বিকট আওয়াজ করে তেতুল গাছের ডালগুলো ধুুমরে মুচরে মিঠুদের বাড়ির উঠোনির দিকে আসতে থাকে। সবাই ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে ঘরে চলে যায়। মিঠুও ভয়ে ঘরে চলে আসে। বাড়ির উঠোনে গাছের ডালগুলো শব্দ করতে করতে আছড়ে পরে। সবাই ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে, পুরো উঠোন তেতুল গাছের ডাল দিয়ে ভরে গেছে। মিঠু সহ সবাই ভয় পেয়ে দোয়া দুরুদ পড়তে থাকে। সবাই ভয় পেয়ে যায়।

 

তখনই পাশের বাড়ির সেই মেয়েটির ভয়ানক হাসি কানে ভেসে আসে। যে মেয়েটি গতকাল রাতে ঘর থেকে বের হয়েছিল তখন অদ্ভুত ভাবে হাসছিল ও সবাইকে শাসিয়েছিল,এখনও সেই মেয়েটি ভয়ানক ভাবে হাসছে। মিঠু ভালো করে খেয়াল করে পুরো উঠানই তো ফাকা মনে হচ্ছে। মিঠু সহ সবাই দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে দেখতে পায়, পুরো উঠোন খালি। তেতুল গাছের ডাল তো দূরের কথা একটা পাতাও নেই। মিঠুসহ সবাই পাশের বাড়ির দিকে যেতে থাকে। সে তেতুল গাছের ছায়ার দিকে তাকিয়ে দেখে,গাছের ছায়ার সাথে সেই মানুষের মতো অবয়বটির ছায়াটি এখন আর নেই।

 

সবাই পাশের বাড়িতে গিয়ে দেখে,সেই মেয়েটি এই মাঝরাতে বাড়ির উঠোনে গড়াগড়ি দিয়ে হাসছে। মেয়েটির হাসি যেন থামছেই না। আশেপাশের বাড়ি থেকেও লোকজন এসেছে। আজও মেয়েটিকে ধরতে গেল বা মেয়েটির কাছে যেতে চাইলে সে বলতে থাকে সাবধান কেউ আমার কাছে আসবি না। আসলেই ঘাড় ম,ট,কে দেবো। ভয়েতে কেউ মেয়েটির কাছে যায় না। গতকাল রাতের মতো তার মা ও বাবা মেয়েটির কাছে যেতেই সেখানের পরিবেশ পুরো বদলে যায়। মেয়েটি ভয়ানক ভাবে হাসতে থাকে।

 

মেয়েটির মুখ দেখা যাচ্ছে না।সামনের চুল দিয়ে পুরো মুখ ঢেকে আছে। সাথে সাথে মেয়েটি শূন্যে ভেসে উঠে। সে ভয়ানকভাবে শূন্যে ভেসে উঠে। সেখানে থাকা সবাই এটা দেখে ভয়ে এদিক ওদিক দৌড়াতে থাকে। মিঠুও তার বাড়ির লোকজন সবাই দৌড়ে সেই বাড়িরই একটা ঘরে আশ্রয় নেয়। ভয়ানক একটা হাসি দিয়ে মেয়েটি শূন্যে ভাসতে ভাসতে সেই তেতুল গাছের দিকে যেতে থাকে। সবাই এটা দেখে খুবই ভয় পায়। মেয়েটির মা তো কান্না জুরে দেয়। একসময় কয়েকজন মিলে বলছে মেয়ের ভাব তো ভালো না। সবই তো দেখছো। মেয়েটির কিছু হয়ে যাবার আগেই তারাতারি যাও ,মসজিদের হুজুর কে ডেকে আনো কেউ।

 

সেই বাড়ির দুজন লোক মসজিদের ইমাম সাহেব কে ডেকে আনতে যায়। ততক্ষণে মেয়েটি তেতুল গাছের একটা মগডালে আটকে যায়। সেখানে মেয়েটির ওড়না আটকে যায়। সবাই জুরে আওয়াজ করে দোয়া দুুরুদ পড়তে থাকে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। মেয়েটি ভয়ানক ভাবে হাসতে থাকে। সেই হাসির আওয়াজে আরো লোকজন চলে আসে। রাস্তার লোকজনও ভিড় জমাতে থাকে। তারা সবাই বলতে থাকে বেপার কি এই রাতের বেলা একটা মেয়ে তেতুল গাছের এতো উচুতে কি করছে। ততক্ষণে মসজিদের হুজুর চলে আসে। হুজুর নিজের চোখে সবকিছু দেখে। একটা পাটি এনে দিলে হুজুর সেই পাটিতে বসে দোয়া কালাম পড়তে থাকে।

 

পুরো বিষয়টা এখন সবাই বাড়ির উঠোনে দাড়িয়ে দেখছে। সবাই এটা দেখে ভয় পায়। কিছুক্ষণ পর হুজুর আওয়াজ করে বলতে থাকে তুই কে? কেন এই মেয়েটিকে কষ্ট দিচ্ছিস?কে তুই বল?মেয়েটি ভয়ানক ভাবে হাসছে আর বলছে হাহাহা আমি কিছুই বলবো না। হুজুর বলে ভালোই ভালো বলছি বলে দে। নয়লে তোর এমন দশা করবো যে পরে পালানোরও পথ পাবি না। মেয়েটির মুখ থেকে আবারো হাসির আওয়াজ ভেসে আসে। সে বলতে থাকে আমি তো এখানেই থাকি। এই মেয়েকে আমার ভালো লেগেছে। তাই তার সাথে আছি। আমি তো এই তেতুল গাছে থাকি। মেয়েটিকে ভালো লেগেছে।

 

তাই এখন থেকে আমি মেয়েটির সাথেই থাকবো।হুজুর বলে সে সুযোগ তোকে দিলে তো থাকবি। মেয়েটি ভয়ানকভাবে হাসতে থাকে। এতো রাতে একটা তেতুল গাছের উপড়ে মগডালে একটি মেয়ে হাসছে। বেপারটা কতোটা ভয়ানক। সেটা সেখানে থাকা সবাই বুঝতে পারছে। মিঠু দেখে সেখানে খালেদ সহ সবুজও এসেছে। সবুজ এই প্রথম এরকম পরিস্থিতি দেখে ভয় পেয়ে যায়। সবাই তেতুল গাছটির নিচে দাড়িয়ে আছে।মিঠু ও তার বন্ধুরা পাশেই দাড়িয়ে সব দেখছে। মিঠু ভাবে, এই তেতুল গাছে যে কিছু একটা ছিল এটা সে আগেই আন্দাজ করতে পেরেছিল।

 

সে প্রতি রাতে তেতুল গাছের নিচে যে মানুষের অবয়বের ছায়া দেখতে পেত। হয়তো সেটিই মেয়েটিকে ভর করেছে। মেয়েটি ভয়ানকভাবে হেসে বলতে থাকে আমি এই মেয়েকে গাছ থেকে ফেলে দেবো। এটা শুনে মেয়ের মা বাবা ভয় পেয়ে কান্না করতে থাকে। ছেড়ে দাও আমাদের মেয়েকে। আমরা তোমার কি ক্ষতি করেছি। ছেড়ে দাও আমার মেয়েকে। মেয়েটি তখনই আরো ভয়ানক ভাবে হাসতে থাকে। বলতে থাকে হ্যাঁ ছেড়েই দেবো। ছেড়ে দিলে কি হবে?হাহাহাহ করে হাসতে থাকে মেয়েটি। এদিকে হুজুর অনেক্ষন দোয়া দূরুদ সব পড়ে একটা বোতলে কিছু পানি নিয়ে তাতে ফুক দেয়। তেতুল গাছটির চারপাশে বোতলের থেকে পানি ছিটিয়ে দেয়।

 

তারপর বলতে থাকে এখনো সময় আছে মেয়েটিকে নিচে নামা। নয়লে তোকে এই বোতলে ভরব।এটা শুনে মেয়েটি শূন্ে ভাসতে থাকে। আর হাসতে হাসতে সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গাছটির চারপাশে পানি পড়া ছিল। তাই সেই খারাপ জিনিসটা পালাতে পারেনা। সে আস্তে আস্তে নিচে নেমে আসে। হুজুর বলে তুই মেয়েটিকে ছেড়ে দিলে তোকেও ছেরে দেওয়া হবে। কোনোভাবেই সেই ভয়ানক অশরীরী টি রাজি না।পরে হুজুর ষখন সেই ভয়ানক অশরীরী টি কে বোতলে ভরতে যাবে,তখনি মেয়েটি কানযনা করতে থাকে।তেতুল গাছের আশেপাশে লোকজনের ভিড়।সবার ভিড়ের মধ্ে সবকিছু হচ্ছে।

 

মিঠু দেখে হুজুর মেয়েটিকে বলছে। তুই যদি এখান থেকে না যাস, তাহলে বোতলে বন্দি হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাক। তখন মেয়েটি বলে আমাকে ছেড়ে দে। আমি মেয়েটিকে ছেড়ে দিচ্ছি। আমাকে ছেড়ে দে। হুজুর বলে ঠিক আছে। তুই যে এখান থেকে বা এই এলাকা থেকে চলে যাবি,এর প্রমান কি?মেয়েটি বলে আপনি যা করতে বলবেন তাই করব। হুজুর বলে তাহলে তুই তেতুল গাছের বড় একটি ডাল ভেঙ্গে যাবি। একথা শুনে মেয়েটি বলতে থাকে ঠিক আছে। আমি যাচ্ছি। এই কথা বলে মুহুর্তের মধ্েই সেখানে প্রচন্ড বাতাস বয়তে থাকে। সাথে সাথে তেতুল গাছের একটি ডাল ভেঙ্গা পড়ার আওয়াজ শোনা যায়। কিছুক্ষণের মধ্ে বাতাস থামে।

 

মেয়েটি আস্তে আস্তে মাটিতে পরে যায়। তার মা বাবা দৌড়ে আসে। মেয়েটিকে ধরে শোয়ানো হয়। হুজুর পড়াপানি ছিটিয়ে দিলে মেয়েটির হুস ফিরে আসে। তখন সবার উদ্দেশ্যে হুজুর বলতে থাকে,রাতের বেলা কেউ ঘর থেকে বের হলে মাথায় কাপড় দিয়ে বের হবেন। কখনোই মাথার চুল খোলা রাখবেন না। মিঠু ও তার বন্ধুরা হুজুরের খুব কাছে গিয়ে দাড়ায়।হুজুর বলে সবাই যথাসম্ভব পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরবেন,মা বোনেরা পর্দা করবেন।সন্ধার পর চুল খোলা রেখে কোনো অবস্থাতেই ঘর থেকে বের হবেন না।

 

কারন এইসব খারাপ জ্বিন বে অশরীরী যেকোনো গাছেই থাকতে পারে,যে কারোরই বাড়িতে থাকতে পারে। তাই সবাই নামাজ কালাম পড়বেন। তাহলে আপনাদের এসব খারাপ জ্বিন কিছু ই করতে পারবে না। একসময় সব লোকজন যার যার বাড়িতে যেতে থাকে। মেয়েটিও সুস্থ হয়। পরদিন মিঠু জোহরের নামাজ পরে বাড়ি ফিরছে। পথে সবুজের সাথে দেখা। মিঠু বলে দোস্ত চল না আজ থেকে নামাজ পরি। সবুজ বলে হরে দোস্ত নামাজ পরতে হবে। সেদিন সন্ধা হয়ে আসে। তারা তিন বন্ধু মাগরিবের নামাজ পরে রাস্তা দিয়ে হেটে বাড়ি ফিরছে।

 

সমাপ্ত

 

(সকল মোসলমানদের প্রতি একটাই অনুরোধ রইলো,সবাই নামাজ পড়বেন)।

 

গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে,তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।আপনার একটা কমেন্টই ভৌতিক গল্পকে নতুন গল্প লিখতে উৎসাহীত করবে।আর একটা কথা ,আপনার আশেপাশে পরিচিত যারা ভৌতিক গল্প পড়তে পছন্দ করে।তাদেরকে ভৌতিক গল্পে আমন্ত্রন করে গল্প পড়ার সুযোগ করে দিন।যাতে তারাও গল্পগুলো পড়তে পারে।সবাইকে ভৌতিক গল্পের বেপারে জানান ও ভৌতিক গল্প পড়তে উৎসাহিত করুন।

 

#ভূতের_গল্প #অশুভ_ছায়া #ভূতেরগল্প #highlightseveryone #foryoupageシ #অশুভ_ছায়া_লিংক #rpambg11 #আনোয়ারহোসেন #ভূতেরভয়ংকরগল্প

#virals #foryou #foryourpage #horrorstory #bhoothfm #bhoot #horror_story #ghost #অশুভ_ছায়া_ভৌতিক_গল্প #viralposts #লেখকআনোয়ারহোসে #viralpage #viralpost

Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.