...

গোধূলী বেলার স্মৃতি (Unexpected Story) | পর্ব- ৩ | Best Bangla Romantic Golpo

গোধূলী_বেলার_স্মৃতি (Unexpected Story)
পর্ব- ৩
Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)

 

Best Bangla Romantic Golpo | খুব রোমান্টিক গল্প | খুব রোমান্টিক গল্প

Romantic Golpo Bangla | ভালোবাসার রোমান্টিক গল্প

 

রুদ্রিক এগিয়ে গিয়ে আবারো পিছনে ফিরে।কাজল তার দিকে তাঁকিয়ে আছে। রুদ্রিক কিছু একটা বলতে চাইছে কিন্তু ঠিক কীভাবে বলবে বুঝতে পারছে নাহ। রুদ্রিকের অবস্হা বুঝতে পেরে কাজল এগিয়ে এসে বলে উঠে,”ওয়েলকাম! ” কাজলের কথায় রুদ্রিক চমকে বলে,
“আমি আবার কখন থ্যাংকস বললাম? ”
—–“বলেন নি তো কি হয়েছে? বলতে তো চাইছেন,কিন্তু নিজের ইগোর জন্যে ঠিক বলতে পারছেন নাহ। আসলে ড্রাইভারের মেয়েকে কী আর থ্যাংকস বলা যায়?”
কাজলের ত্যারা কথায় রুদ্রিকের নাক লাল হয়ে গেলো।আসলে কোনো এক দিক দিয়ে কাজল ঠিকই বলেছে। এই মেয়েটা সব কিছুই বুঝে যায়।
আমার বড্ড হাঁসি পাচ্ছে। উনার ফেসটুকু দেখে।
আমি আবারোও বলে উঠলাম,
“ব্যান্ডেজটা গিয়েই খুলে ফেলবেন নাহ। কাল সকালে শাওয়ার নেওয়ার সময় খুলে ফেলবেন। তাহলে চটের জায়গাটা ভালো করে শুকিয়ে যাবে। ”
ছোট সাহেব কিছু না বলে আমাদের বাড়ির সদর দরজা দিয়েবেড়িয়ে গেলেন।
আমি আনমনেই বলে উঠি,
“কিছু কিছু সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইগো থাকাটা খুব জরুরী। অদ্ভুদ লাগলেও এইটাই সত্যি৷”
রুদ্রিক নিজের গাড়িতে ঢুকে গাড়ির জানালা দিয়ে এক পলক কাজলের জানালার দিকে তাঁকায়। উদ্দেশ্য এক পলক কাজলকে দেখে যাওয়া। কিন্তু কাজল নেই। এতে রুদ্রিক আশাহত হয়। আজ-কাল তার চোখ-জোড়া শুধুই কাজলকেই খুঁজে। অনেক নারীর সাথেই তার সম্পর্ক কিন্তু রুদ্রিক কখনোই কোনো নারীর কাছে এতোটা শান্তি পাইনি যতটা কাজলের কাছে গেলে সে পায়। কাজলের কথাগুলো বেশ ভাবাচ্ছে তাকে।
“নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে শিখুন। ”
নিজের ভাবনার নিজের কাছেই বেশ উদ্ভুট লাগছে রুদ্রিকের। সে নিজের মাথায় নিজেই টুকা মেরে বলে,
“রুদ্রিক তোর মাথা ওই বদমাশ মেয়ের জন্যে সত্যি গেছে। এখন বাড়িতে গিয়ে ভালো করে ঘুমানোর দরকার। লাস্ট তিনদিন ধরে ভালো করে ঘুম হয়নি। ”
কথাটা বলেই গাড়ি ঘুড়িয়ে ফেলে রুদ্রিক।
ছোটসাহেবের গাড়ি চলে যেতেই জানালার আড়াল থেকে বেড়িয়ে আসি আমি। এতোক্ষন ধরে আমি জানালার আড়াল থেকে ছোট সাহেবকে দেখে যাচ্ছিলাম। দেখছিলাম তিনি আমাকে এক পলক দেখার জন্যে কীভাবে উৎকন্ঠা হয়ে ছিলেন। উনার সেই মুখটক দেখে মনে অদ্ভুদ ভাবে আনন্দের দোলা দিয়ে উঠলো। মুখে ফুটে উঠলো হাঁসি।
রুদ্রিক নিজের গাড়ি শেখ বাড়ির সামনে রাখলো।
ফোনের মিসডকলে প্রায় শতাধিক মিসডকল..।
রুদ্রিক জানে কে কল করেছে তা সে দেরী না করে তাড়াতাড়ি করে বাড়ির ভিতরে ঢুকে গেলো।
ড্রইং রুমে চারপাশে পাইচারি করছে মিস ইশানি শেখ। রান্নাঘর থেকেই অন্যান্য সার্ভেন্টদের সাথে রান্না করছে মিসেস জেসমিন শেখ। জেসমিনের চোখ বার বার সদর-দরজার দিকে যাচ্ছে। উদ্দেশ্য ছেলেটা একটিবারে আসলে, চোখের দেখা টুকু দেখতে পাওয়া। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে রুদ্রিক প্রবেশ করলো। রুদ্রিককে দেখে ইশানী শেখ তাড়াতাড়ি রুদ্রিকের কাছে গিয়ে রুদ্রিকের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে-
“রুদ্রিক, আমার বাচ্ছা তিনরাত ধরে কোথায় ছিলে তুমি? তুমি জানো নাহ তোমার পিপি(ফুপি) কত চিন্তা করে।”
রুদ্রিক তার ফুপিকে জড়িয়ে বলে-
“হুম পিপি বাট তুমি তো জানো আমি কত বিজি ছিলাম তাই ইনফর্ম করতে পারিনি। ”
——-“হুম ডেটিং-ই ‘ বিজি ছিলে তুমি সেইটা আমি খুব ভালো করেই জানি। ”
কথাটি বলেই ইশানী রুদ্রিকের মাথায় আস্তে করে টুকা মেরে বলে-
“এর জন্যে শাস্তি আছে তোমার। ”
রুদ্রিক মুখটা কিছুটা কাচুমাচু করে বলে উঠে,
“তুমি তোমার রুদ্রিককে শাস্তি দিবে পিপি?এইটা কিন্তু ঠিক না। ”
রুদ্রিকের কথায় ইশানি হেঁসেই বলে,
“আমি কী আমার বাচ্ছাকে শাস্তি দিতে পারি? যাও এখন তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আসো। আমি ব্ল্যাক কফি পাঠিয়ে দিচ্ছি৷

 

Read More romantic golpo | রোমান্টিক গল্প | Bangla Golpo

 

দূর থেকে সবকিছু দেখছেন মিসেস জেসমিন। তার মনে খুব লোভ জাগলো। তার ছেলেটিও যদি এইভাবে একটিবার তাকে জড়িয়ে মা বলে ডাকতো,তাহলে কী খুব বেশি ক্ষতি হতো। তিনি জানেন তা কখনোই সম্ভব নাহ।
রুদ্রিক বলে উঠে,
—” ওকে পিপি আমি যাচ্ছি..”
এই বাড়িতে রুদ্রিক যদি একমাত্র কারো কথা শুনে থাকে, সে হলো মিস ইশানি শেখের।
রুদ্রিক চলে যেতে নিলে মিসেস জেসমিন শেখ হন্তদন্ত হয়ে বেড়িয়ে এসে বলে,
“রুদ্রিক, তোমার হাতে কিসের ব্যান্ডেজ? ”
মিসেস জেমসিন শেখের কথায় ইশানিও বলে উঠে,
“আমি তো খেয়াল করেনি। রুদ্রিক আমার বাচ্ছাটা তোমার হাত কী করে কাটলো? ”
রুদ্রিক ইশানির দিকে তাঁকিয়ে কিছুটা গম্ভীর সুরে বলে,
—-“তেমন কিছু নাহ পিপি। ইটস জাস্ট একটা এক্সিডেন্ট। ঠিক হয়ে যাবে। আর তুমি মিসেস শেখ কে বলে দাও উনি যেনো আমার ব্যাপারে ইন্টারফেয়ার না করে। উনাকে আমি আগেও বলেছি এইসব আমার পছন্দ নয়। ”
কথাটা বলেই রুদ্রিক গটগট করে উপরে চলে যায়।
মিসেস জেসমিন শেখ দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
আমি মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম, ছুটকিকে নিয়ে। ছুটকিকে কলেজে পৌছে দিয়ে, আমি ভার্সিটিতে চলে এলাম।
এদিকে রুদ্রিক তার বন্ধুদের সাথে ক্যান্টিনে বসে আড্ডা দিচ্ছে।
রুদ্রিকের বন্ধু ইথান বলে,
“—–আচ্ছা আমাদের সাদি কোথায় রে? ”
——-“কোথায় আবার? আমার পড়ুয়া বন্ধু তো সারাদিন লাইব্রেরিতে বইয়ে মুখ দিয়ে গুজে থাকে। ”
তন্ময়ের কথায় ইথান হেঁসে বলে,
“টপ বয় বলে কথা। আচ্ছা রুদ্রিক, সামনে ভার্সিটির ফাংশন আছে। কি প্ল্যান তোর? ভেবেছিস কিছু? ”
রুদ্রিক বলে,
“প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে আমার কথা হয়েছে সব হয়ে যাবে। ডোন্ট ওয়ারি আর বাকি কিছু থাকলে আমরা সামলিয়ে নিবো। ”
পলক বলে উঠে,
“আমাদের এইবারের ফাংশনও প্রত্যেকবারের মতো স্পেশাল করে তুলতে হবে। ”
——–“আমাদের চিন্তার কোনো দরকার-ই ‘ নেই। এইবার যখন আমাদের রুদ্রিক ভিপি হয়েছে। এইবার প্রত্যেক বছরের থেকে আরো বেশি স্পেশাল হবে। ”
শোভনের কথা শুনে জেনি কিছুটা খুশি হয়েই বলে,
“এই না হলে আমার রুদ্রিক। আমার রুদ্রিকের সব কাজ-ই ‘ পারফেক্ট। তাই আমি রুদ্রিককে চুজ করেছি। ”
—-“হুম জেনি তোর রুদ্রিক সবকিছুতেই পারফেক্ট। এমন কী মেয়ে পটাতেও তাইনা রুদ্রিক? ”
কথাটা বলেই তন্ময় চোখ টিপ দেয় রুদ্রিককে।
রুদ্রিক বাঁকা হাঁসে। জেনি বলে উঠে,
“আমি ঠিক বুঝলাম নাহ৷ ”
—–“সব কথা না বুঝাই ভালো,কিছু সময় কিছু না জেনে থাকা ভালো, জেনি ডার্লিং। ”
কথাটা বলেই রুদ্রিকের চোখ যায় ভার্সিটির গেটে দাঁড়িয়ে থাকা হলুদপরীর দিকে। হুম কাজলকে আজ রুদ্রের কাছে ঠিক হলুদপরীর মতোই লাগছে।
কাজলের পড়নে হলুদ হিজাব ও হলুদ চুরিদার। বেশ মানিয়েছে কাজলকে।
ভার্সিটির গেটে প্রবেশ করতেই আমার চোখ যায় ছোট সাহবের দিকে। ক্যান্টিনে বসে আছেন নিজের বন্ধুদের নিয়ে সাথে জেনি আপুও আছে। আমাদের ভার্সিটির সিনিয়র জেনি আপু। উনার গার্লফ্রেন্ড বলা চলে। জেনি আপু বকবক করে ছোট সাহেবের কান ঝালাপালা করে দিচ্ছে। কিন্তু ছোট সাহবের এইসব শুনার সময় কোথায়? তিনি তো মনোযোগ দিয়ে তার ফোন গুতিয়ে যাচ্ছে।
তখনি পিছন থেকে সিথি হাফাতে হাফাতে এসে বলে উঠে,
“এইতো দোস্ত, আমি এসে পড়েছি। চল তাড়াতাড়ি।”
সিথি ছোট সাহবের একমাত্র বোন। যদিও ছোট সাহেব ও সিথির মাঝে আকাশ-পাতাল তফাৎ।
এই ভার্সিটিতে আসার পর আমাকে সবসময় সিথি এবং সাদি ভাইয়া-ই ‘ সাহায্য করে গিয়েছে। একপ্রকার আগলে রেখেছে।
সিথিকে দেখে আমি কিছুটা মেকি রাগ দেখিয়ে বললাম,
“তোর এতোক্ষনে সময় হলো। ”
“সরি রে, আসলে তুই তো জানিস আমি কালকে পার্টিতে ছিলাম, তাই ঘুম থেকেও উঠতে লেট হয়ে গিয়েছে। ”
সিথির কথায় আমি বলে উঠি,
“সত্যি তোরা ভাই-বোন শুধরাবি নাহ।”

 

Read More romantic golpo | খুব রোমান্টিক গল্প | Bangla Golpo 

 

আমার কথায় সিথি বলে উঠে,
“ভাইয়ার সাথে আমাকে একদম মিলাতে যাবি নাহ। এমনিতেও ভাইয়াকে দেখলে আমি দশফিট দূরে থাকি। ভাইয়া তো আমাকে দেখতেই পারে নাহ। ”
——- “এইবার চল তাড়াতাড়ি লাইব্রেরি থেকে নোট কালেক্ট করতে হবে। ইম্পোর্টেন্ট ক্লাস আছ। ”
সিথি কিছু একটা ভেবে বলে উঠে,
“কিন্তু দোস্ত আমার কিছু অ্যাসাইনমেন্ট জুনিয়রদের দিয়ে করিয়েছি। ওদের থেকে কালেক্ট করতে হবে।”
——“ফাঁকিবাজ একটা। ঠিক আছে আমি লাইব্রেরিতে যাচ্ছি। ”
কথাটা বলেই আমি লাইব্রেরির উদ্দেশ্য পা বাড়ালাম।
কাজলে লাইব্রেরিতে যেতে দেখে তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়ালো রুদ্রিক। কেননা এইসময় লাইব্রেরি পুরো ফাঁকা থাকে এবং সাদিও এখন লাইব্রেরিতে আছে। কথাটা ভেবেই অজানা ভয় ঢুকে গেলো। কেনো যেনো রুদ্রিকের কিছু ঠিক লাগছে নাহ। রুদ্রিক বিড়বিড় করে বললো…
I’ have to go to the library right now.
(আমাকে এখুনি লাইব্রেরিতে যেতে হবে)
“আমি এখুনি আসছি। ”
কথাটা বলে রুদ্রিক দ্রুত লাইব্রেরির দিকে চলে গেলো।
আমি লাইব্রেরীতে গিয়ে দেখি সাদি ভাইয়া এক কোনায় গিয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছে। সাদি ভাইয়ার একটি জিনিস খুব ভালো লাগে তিনি সবসময় পড়াশুনো নিয়ে থাকতে পছন্দ করে। আমাকে দেখে সাদি ভাইয়া হেঁসে বলে উঠে,
“কাজল কখন এলে তুমি? ”
——-“এইতো মাত্র। ”
——“ঠিক আছে, তুমি বরং থাকো। আমি কফি খেয়ে আসি। অনেক্ষন ধরে পড়তে পড়তে ঘুম চলে এসেছে।তুমি খাবে? ”
—–“আপতত নাহ। ”
—-“ঠিক আছে, আমি বরং গিয়ে খেয়ে আসি।”
কথাটি বলেই সাদি ভাইয়া চলে গেলো।
সাদি যাওয়ার সাথে সাথেই রুদ্রিক লাইব্রেরিতে চলে আসে।
আমি নিজের নোট খুঁজতে শুরু করে দিলাম,কিন্তু নোটা টা অনেক উপরের সেল্ফে তাই টুলের উপর কোনোরকম উঠে দাঁড়ালাম। কিন্তু বেশ ভয় লাগছে। টুলটা কেমন নড়ছে। এই মনে হয় আমি এখুনি পড়ে যাবো। ভাবতেই ভাবতেই আমার পা পিছলে পড়ে যেতে নিলে সজ্ঞে সজ্ঞে সেখানে ছোট সাহেব চলে আসেন। ধাপ করে আমি নীচে লাইব্রেরির সেল্ফ নিয়েই পড়ে যায়। । উনি শুধু হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আসলে মুহুর্তেই ঠিক হয়ে গিলো, তা হয়তো বুঝতে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে উনার। এদিকে আমি নীচে পড়ে আছি। সেদিকে বেটার খেয়াল নেই।
ব্যাপারটা সিনেমাটিক ভাবে হলেও মেনে নেওয়া যেতো তাই বলে এতোটা হাস্যকর। আমি কিছুটা মেকি রাগ দেখিয়ে বললাম,
“এইভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? আমাকে উঠতে সাহায্য করুন। ”
—–“রাফসিন শেখ রুদ্রিক তোকে সাহায্য করবে? হুহ। নিজেকে কি মনে করিস কী তুই? ”
লোকটার কথা শুনে মাথাটা গরম হয়ে যাচ্ছে। তাই আমিও বলে উঠলাম,
“ঠিক আছে আমি সাদি ভাইয়াকেই ডাকবো। উনি এসে আমাকে ঠিক সাহায্য করবে।”
——“সাদি ভাইয়া, শুনছেন???”
তখনি উনি আমার দিকে ঝুঁকে আমার মুখ চেপে ধরেন। উনার গরম নিঃশ্বাস আমার কাঁধে পড়ছে। কি হলো কে জানে আমি উনার চোখে ডুবে যাচ্ছি অতলভাবে। ‘কিছুটা গভীরভাবে, কিছুটা অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে.’।
তখনি হুট করে সেখানে………
(নীচের কথাগুলো পড়বেন….)
চলবে………….!!!!

 

গোধূলী বেলার স্মৃতি (Unexpected story) | পর্ব- ৪

 

 

More Best Bangla Golpo | Romantic Golpo  | Vuter Golpo 

Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.