...

তুমি আমার প্রিয়তম | সূচনা পর্ব | Bangla Romantic Golpo

তুমি_আমার_প্রিয়তম
সূচনা_পর্ব
আফিয়া_আফরোজ_আহি
Romantic Golpo Bangla | ভালোবাসার রোমান্টিক গল্প
“হেই মিস্টার ,উইল ইউ বি ব্রাদার ইন-ল অফ মাই সিস্টার “
“হোয়াট”
পুরো ভার্সিটি ক্যাম্পাস স্বতঃব্ধ।নেই কোনো কোলাহল যেন এখানে সবে মাত্র কোনো বোম ব্লাস্ট হলো। একটা মেয়ের এত সাহস ভার্সিটি তে আসার এক সপ্তাহের মধ্যে ভার্সিটির সবচেয়ে রাগী,মেধাবী, সুদর্শন,এটিটিউড সম্পন্ন ছেলে প্লাস ভার্সিটির ভিপি আরিয়ান খান আরাভ কে সরাসরি প্রপোজ করে।
“ইংলিশ বুঝো না। ওকে সমস্যা নাই বাংলায়ই বলি। তুমি কি আমার বোনের দুলাভাই হবা?? যদিও আমার কোনো বোন নাই। কিন্তু কাজিন আছে।”
আরাভ মেয়েটাকে পর্যবেক্ষণ করে দেখলো কালো লং শার্ট,কালো পেন্ট,কালো সু,গলায় একটা ইয়ার ফোন, মুখে মাস্ক আর চুল গুলো পিছনে ঝুটি করা মেয়েটিকে আগে ক্যাম্পাসে দেখেছে বলে মনে হয় না।দেখা শেষে হটাৎই সে ধমকে বলে উঠলো,
“এই মেয়ে কে তুমি?এইগুলি কীসব কথা বার্তা?”
“আমি তোমার জান আর্শিয়া।আর জান এইগুলি তো কথা বার্তা না। এটা তো প্রপোজাল । পছন্দ হয় নাই”
“তোমার কি মাথা ঠিক আছে? তুমি জানো আমি কে?”
“ওমা একি কথা, তুমি জানো না তুমি কে?”
“ফাইজলামি করতাছো আমার সাথে। এই আরিয়ান খান আরাভ এর সাথে।তোমার সাহস তো কম না “
“আমি তোমার সাথে ফাইলামি কেন করবো জান, আমি তো তোমার সাথে প্রেম করবো।আর সাহস টা আমার ছোট বেলা থেকেই বেশি।”
কথাটা বলেই চোখ টিপ দিয়ে একটা ফ্লাইং কিস ছুড়ে দিল আর্শিয়া ।আর্শিয়ার এই কাণ্ডে যেন আরাভ একটু ভড়কে গেলো। ওকে আরো একটু ভরকানোর জন্য ওর কাছে যেতে লাগল।
এর মধ্যেই বাজখাই কণ্ঠের এক ধমকে থেমে গেল আর্শিয়া,
“এই মেয়ে একদম আমার কাছে আসবে না। দূরে যাও, দূরে যাও বলছি। তোমার সাহস দেখে আমি বরাবর অবাক হচ্ছি যেখানে মেয়েরা ভয়ে আমার সামনে পর্যন্ত আসে না সেখানে তুমি আমাকে ফ্লাইং কিস দাও। প্রশংসা করতে হয় তোমার।
এরপর কিছুটা বাঁকা হেসে বলো,
“কিন্তু তুমি যে ভুল মানুষের সামনে ভুল কাজ করে ফেলেছো। এর ফল তোমাকে ভুগতে হবে।আর ইউ রেডি মিস?
“আই এম অলওয়েজ রেডি ফর ইউ জান।উম্ম্মাহ…
বলে সেখান থেকে চলে আসল ।আর মনে মনে বললো ‘প্রথম দিন এতটুকু ডোজই যথেষ্ট তাকে আমার কথা ভাবানোর জন্য’। এসে গাড়িতে বসে ড্রাইভার আঙ্কেলকে বলল,
“আঙ্কেল চলুন “
“কোথায় যাবে মামনি?
“অফিসে চলুন “
ঠিক আছে বলে আঙ্কেল গাড়ি স্টার্ট দিলেন।
চলুন এবার আপনাদের পরিচয়টা দিয়ে দেই, আবরার চৌধুরী ও আয়েশা চৌধুরীর একমাত্র মেয়ে আরিশফা চৌধুরী আর্শিয়া । আর্শিয়ার যখন মাত্র চার বছর তখন তার মা তাকে রেখে ওই দূর আকাশের তাঁরা হয়ে যায়। আর্শিয়ার বাবারা এক ভাই, এক বোন। ওর ফুফা দেশের বাহিরে থাকে তাই ওর ফুফু ওর মা চলে যাওয়ার পর ওদের বাড়িতে চলে আসে এবং সেই আর্শিয়াকে বড় করে। তার একটা ফুফাতো ভাই আছে যার নাম আরিশ। সে আর্শিয়ার থেকে দশ বছরের বড়ো।সে বিবাহিত প্লাস তার চার বছরের একটা ছেলে আছে।
গাড়িটা জ্যামে আটকে আছে তাই আর্শিয়া কি করবে ভেবে না পেয়ে ফোন বের করে “টকিং টম ” গেম টা খেলা শুরু করল। সে গেম খেলায় মগ্ন এমন সময় আঙ্কেল বলেন,”আমরা এসে গেছি মামনি”। তাই গাড়ি থেকে নেমে অফিসের দিকে হাঁটা শুরু করল।অফিসে ঢুকেই প্রথম বাবার কেবিনে গেল।বাবা তো আর্শীয়াকে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“আমার মা টা হটাৎ এই সময়ে তার ছেলের কাছে?
“কেন আসতে পারিনা বুঝি?
“অবশ্যই,আমার মা তার ছেলের কাছে যে কোনো সময় আসতে পারে।তা কোনো সমস্যা হয়েছে মা?আর আজকে ক্লাস কেমন হলো??
সে তার বাবার কাছে যেয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
“কোনো সমস্যা হয়নি বাবা।আমি তোমায় অনেক মিস করছিলাম তাই চলে এলাম।আর ক্লাস ও ভালো হয়েছে।
এর মধ্যেই ভাইয়া এসে তার মাথায় গাট্টা মেরে বললো,
“বাবাই পেত্নী হটাৎ এখানে কি করছে গো?
“ভাইয়ার বাচ্চা…তুই পেত্নী কাকে বলিস?”
“ওই তুই এখানে কোথায় আমার বাচ্চা পাইলি।আমার বাচ্চা তো বাসায়। আর পেত্নীকে পেত্নী বলবো নাতো কি বলবো, পরি?
“এই কি শুরু করলি তোরা দুই ভাই বোন। চুপ কর দুই জনই।আর আরিশ মেনেজার কে বল আমার মা এসেছে তাই আমাদের তিনজনের জন্য লাঞ্চ পাঠিয়ে দিতে।
“ওকে বাবাই”। আমি এক্ষুনি বলছি বলে ভাইয়া চলে গেলো। আর আর্শিয়া তার বাবার সাথে গল্প করা শুরু করল।কিছুক্ষন পর ভাইয়া খাবার নিয়ে এলো আর সবাই খেয়ে নিল।খাওয়ায় পর আর্শিয়া,ভাইয়া আর বাবা কিছুক্ষন গল্প করল । তারপর বাবা বললো,
” আরিশ আমার মা টাকে বাড়িতে দিয়ে আয়।”
“ওকে “বলে ভাইয়া আমাকে ইশারা করলো ওর সাথে যাওয়ার জন্য তাই আর্শীয়াও বাবাকে বায় বলে ভাইয়ার সাথে বাড়ি চলে এল।বাড়িতে আসতেই মামনি বললো,
“কিরে আরিশ, তুই এই সময়?”
“তোমার আদরের মেয়েকে দিতে এলাম।”
“তুই কি আর্শিয়ার ভার্সিটি তে গিয়েছিলি ওকে আনতে??
“না,তোমার মেয়ে তার বাবা কে নাকি মিস করছিলো তাই অফিসে গিয়েছিলো।আর বাবাই বললো ওকে দিয়ে যাওয়ার জন্য।ওকে,আমি গেলাম।
বলে ভাইয়া চলে গেলো আর্শীয়াও মামনির সাথে ভিতরে গেল।এমন সময় একটা ডাকে থেমে গেল,
“আত্মা “
বলেই আর্শিয়ার পা জড়িয়ে ধরলো তার ছোটো বাবাটা। সেও তাকে কোলে তুলে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটা দিল।পিছন থেকে ভাবি বলতেছে,
“আরুশ, বাবা খাবার টা শেষ করে যাও।”
“আমি খাবো না আমি আত্মার সাথে যাবো।
“তোমার আত্মা মাত্র এসেছে,ফ্রেশ হয়ে নিক তুমি আমার কাছে এসো। কিন্তু সে আমার কাছ থেকে যাবে না তাই আমি ভাবীকে বললাম,
“ভাবি বাদ দাও ও আর খাবে না,ও আমার সাথেই যাক।
“তোর আদরে আদরে ও একটা বাঁদর হয়ে যাচ্ছে “
“আমার দশটা না,পাঁচটা না একটা মাত্র ভাতিজা তাকে আদর করবো নাতো কাকে আদর করবো,বলো?
বলে আরুশ কে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠে রুমের দিকে হাঁটা দিল। রুমে এসে আরুশকে বিছানায় বসিয়ে ওর হাতে একটা চকলেট দিয়ে বলল,বাবা তুমি বসো। “আত্মা” ফ্রেশ হয়ে আসি।তার বাবা টাও মাথা নেড়ে সায় দিলো তাই একটা টিশার্ট আর টাউজার নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে আরুশ চকলেট মুখে নিয়ে ঘুমিয়ে গেছে। তাই আর্শিয়া ওর কাছে দিয়ে চকলেট টা নিয়ে মুখ মুছিয়ে দিয়ে ওকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।রাত আট টার দিকে ঘুম থেকে উঠে দেখে আরুশ পাশে নাই ভাবি হয়তো এসে নিয়ে গেছে। ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে দেখেলো তার বাবা আর ভাইয়াও চলে এসেছে।সবার সাথে কিছুক্ষন গল্প করে ও ডিনার করে রুমে এসে আবার একটা ঘুম দিল।
চলবে??

তুমি আমার প্রিয়তম | পর্ব – 2

Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.