...

Best Bangla Golpo 2024 | লাশ আতঙ্ক | Vuter Golpo | ভূতের গল্প | সম্পূর্ণ পর্ব

 

সম্পূর্ণ পর্ব

#লেখক_আনোয়ার_হোসেন

 

সময়টা তখন শীতকাল। সন্ধাবেলা বাড়ির পাশে আগুন ধরানো হয়েছে। তাতে কয়েকজনের মিলে আগুন পোহাচ্ছে। আমিও তাদের সাথে যোগ দিই। পাশের বাড়ির নেহান ও আমি দুজনে বসে আছি। কিছুক্ষণের মধ্যে আশেপাশে অন্ধকার হয়ে যায়। মানে সন্ধা হয়ে গেছে। গ্রামে তো খুবই তারাতারি রাত হয়ে যায়। এই ধরুন আটটা নয়টা বাজলেই গ্রামে অনেক রাত। নেহান একসময় চলে যায়। আমি ঘরে শুয়ে আছি। আমাদের বাড়ির পাশে একটি ধানক্ষেত আছে। ধানগুলো পেকে গেছে। দুয়েকদিনের মধ্যেই হয়তো ধানগুলো কাটা হবে।

 

সন্ধারাতে হঠাৎই শুনি আমার রুমের পাশের ধানক্ষেত থেকে কিরকম একটা অদ্ভুত আওয়াজ আসছে। আওয়াজটা ঠিক এরকম,যেমন ঝড়ো হাওয়া হলে শনশন আওয়াজ হয় ঠিক তেমন। জানালা খুলে দেখি প্রচন্ড বাতাস বইছে। আহা গায়ে খুবই ঠান্ডা বাতাস এসে লাগে। সাথে সাথে জানালাটি বন্ধ করে দিই। সেদিন রাতে সবাই খেয়েদেয়ে শুয়ে ঘুমিয়ে পরি। মাঝরাতে হঠাৎই আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। আমি জেগে শুনতে পায়। ধানক্ষেতে কি যেন বিরবির করে কিছু একটা বলছে। ভাবলাম হয়তো চোর এসেছে, হয়তো বা ধান চুরি করবে।

 

তাই আমি একটা জানালা খুলে বাহিরে দেখার চেষ্টা করি,যে ধানক্ষেতে আসলেই কোনো চোর আসলো কিনা। কিন্তু জানালা খুলতেই ঠান্ডা বাতাস আমাকে শিতল করে দেয়। আমার চোখ যায় ধানক্ষেতের মাঝখানে ,আরে ঐটা আবার কি! দেখে তো মনে হচ্ছে সাদা কিছু পরে আছে। একবার গিয়ে দেখবো! নাহ। যাওয়া ঠিক হবে না। মাকে ডাকবো! মনে মনে এসব ভাবতে থাকি। মাকে কয়েকবার ডাক দিলেও কোনো সাড়া পাইনি। তাই একা ঘর থেকে বের হবার সাহস পাইনি। পরক্ষণেই ঘুমিয়ে পরি।

 

পরদিন সকালবেলা লোকজনের হৈ-হুল্লুর আওয়াজে আমার ঘুম ভাঙ্গে। কয়েকজন মিলে কি যেন বলছে। আমি দ্রুত বিছানা ছেড়ে উঠে পরি। বাহিরে গিয়ে দেখি আমার রুমের পাশে ধানক্ষেতে সবাই কি যেন করছে! সেখানে গিয়ে দেখি ধানগাছে র,ক্ত লেগে আছে। সবাই র,ক্ত দেখেই সেখানে ভিড় করেছে। আমি খুবই অবাক হয়। এখানে তো আমি রাতে কাওকে বিরবির করে কথা বলতে শুনেছিলাম। তাহলে এখানে র,ক্ত আসলো কোথা থেকে!

 

কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারেনা। একসময় সেখান থেকে সবাই চলে যায়। আমি আমার কাজে, মানে কলেজে চলে যায়। বিকেলে কলেজ থেকে ফিরে পাশের বাড়ির একটা ছোট ছেলেকে টিউশনি পড়িয়ে সন্ধাবেলা বাড়ি ফিরি। সন্ধার পর আমি নামাজ পরে বাড়ি ফিরছি। সাথে কেউই ছিল না। একা একা হেটে বাড়ির প্রায় কাছেই চলে এসেছি। তখন পাশের বাড়ি থেকে একজন লোকের কথার আওয়াজ পাই। সেই বাড়িতে গিয়ে দেখি দুজন লোক বাড়ির মহিলাদের সাথে দাড়িয়ে আছে। আমি সেখানে যাওয়ার পর পাশের বাড়ির মহিলাটি বলে সে নাকি তাদের বাড়ির পাশে রাতের বেলা একটি লাশ দেখেছিল। সেটা নিয়েই এখন তারা আলোচনা করছে।

Best Bangla Golpo | Bhooter golpo | Horror Story

আমি আবার এসব বিশ্বাস করিনা। তাই তাদের কথায় কান না দিয়ে সেখান থেকে চলে আসি। রাতের বেলা ঘুমিয়ে আছি। হঠাৎই আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। আমি জেগে শুনতে পাই। আমার রুমের বাহিরে কিছু একটা শব্দ করছে। মনে হচ্ছে আমার ঘরের ঠিক সামনে দিয়ে কেউ কিছু একটা টেনে নিয়ে যাচ্ছে। কৌতুহলবশত ঘরের বাহিরে তাকিয়ে দেখি। বাহিরে একটা লোক কিছু একটা টেনে আমাদের পুকুরপাড়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমি একটা টর্চ হাতে নিয়ে দরজা খুলে বাহিরে বের হই। আর একটু সামনে এগোতেই দেখতে পাই মাটিতে একটা লাশ পরে আছে। লাশটি দেখে আমি অনেক ভয় পেয়ে দৌড়ে রুমে চলে আাসি।

 

আমার খুব ভয় লাগছে।কে যেন এইমাত্র সেই লাশটিকে টেনে আমার রুমের সামনে দিয়ে সেখানে নিয়ে গেল। আমি পাশের রুমে বাবাকে ডেকে বিষয়টি বলি। বাবা উঠে কসে। বাবাকে সাথে নিয়ে সেই লাশটির কাছে গিয়ে দেখি সেখানে কিছুই নেই। বাবা বলে তুই কোথাও ভূল করেছিস হয়তো। এটা তোর দুঃস্বপ্নও হতে পারে।

বলি না বাবা। আমি কিছুক্ষণ পূর্বে এখানে একটা লাশ দেখেছি। তাই সেখানে কিছু না দেখতে পেয়ে বাবা ও আমি ঘরে চলে আসি। পরদিন আমি কলেজে গেলে, কয়েকজন বন্ধু বলতেছে যে তাদের বাড়িতে নাকি গতরাতে সবাই একটি লাশ দেখেছে। লাশটি মাটিতে পরে ছিল। আমি জিগ্যেস করি, আচ্ছা পরে লাশটির কি হলো? তখন তারা বলে কি আর হবে। আমরা লোকজনকে ডেকে নিয়ে সেখানে গেলে দেখি লাশটি নেই।

 

এক সময় কলেজ ছুটি হলে সবাই যার যার মতো করে বাড়ি ফিরে যায়। আমিও বাড়ি চলে আসি। সন্ধার পর মসজিদ থেকে নামাজ পরে বাড়িতে ফিরছি। হঠাৎই আমার চোখ যায় আমাদের বাড়ির গাব গাছটির উপর। দেখি গাব গাছের ডালে সেই লাশটি রাখা। এটা দেখে আমি ভয় পেয়ে দৌড়ে চলেই যাচ্ছিলাম। ঠিক তখনই গাছ থেকে লাশটি আমার সামনে পরে যায়। আমি ভয়ে আবার মসজিদের দিকে দৌড়াতে থাকি। মাসজিদে পাশের বাড়ির এক চাচা তখনও নামাজ পরছিলেন। আমি সেই চাচাকে বললে তিনি আমার সাথে আসেন। কিন্তু না। এইবার কোনো লাশ দেখে যায়নি।

 

এক সন্ধাবেলা আমি আমাদের বাড়ির পাশে একটা সুপারি গাছের সাথে হেলান দিয়ে ফোনে কথা বলতেছি। হঠাৎই আমি খেয়াল করি,আমার ঠিক পাশেই একটা লাশ,আর এটা দেখে আমি খুবই ভয় পেয়ে যায়। আমি দৌড়ে পালাতে থাকি। একসময় বাড়িতে চলে আসি। কি শুরু হলো আমাদের এলাকায়! রাত নেই , সন্ধা নেই, যেকোনো সময় শুধু লাশ আর লাশ ! এমনিতেই আমার লাশ দেখলে ভয় লাগে। ভয়ে আমার গা শিউরে উঠে। রাতের বেলা আমি গভীর ঘুমে মগ্ন। হঠাৎই আমার ঘুম ভাঙ্গে। আমার কাছে মনে হচ্ছে, কিছু একটা আমার ঠিক পাশেই শুয়ে আছে। কেমন যেন একটা গন্ধ নাকে আসে।

 

আমি ভয়ে ভয়ে পাশে হাত রাখলাম,আর তাতেই ভয়ে আতকে উঠি। আমি যা ভাবছিলাম তাই হলো। মনে মনে যেটাকে ভয় পেতাম, সেটাই এখন আমার ঠিক পাশে। আমি বুঝতে পারি যে আমার বামপাশে একটা লাশ শুয়ে আছে। মানে লাশটি শোয়ানো অবস্থায়। এটা দেখে আমি ভয়ে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। দেখি সেই লাশটিকে কোথাও আর দেখা যাচ্ছে না।আমি রুমে যেতেও ভয় পাচ্ছি।পাশের রুমে বাবাকে ডাক দিই। বাবা এসে সবকিছু দেখে। বলে বাবা তুই স্বপ্ন দেখেছিস হয়তো। প্রতিদিন কিসব ভৌতিক গল্প পড়িস। এটাই হয়তো তোর মনে কল্পনা হচ্ছে। স্বপ্ন দেখেছিস। এতো করে বলি এসব ভৌতিক গল্প ছাইপাস পড়িস না।

 

না, কে শুনে কার কথা। বাবা পাশের রুমে চলে যায়। আমি ভয়ে ভয়ে রুমে প্রবেশ করি।তারপর সেই রাতে আমি রুমের লাইট জ্বালিয়েই ঘুমাই। সকালে সবাইকে ডেকে আমার সাথে যা ঘঠেছে তা বলি।সবাই বলতে থাকে আরে এটা তোর মনের ভূল।কিন্তু কেউই আমার কথা বিশ্বাস করেনা।তখনই আমার একটা কথা মনে পরে।ওই যে সেদিন পাশের বাড়ির মহিলারা লাশের বিষয়ে কথা বলছিল।আমি তখনই সেই বাড়িতে যাই।

সেই বাড়ির কাকিকে আমার দেখা লাশের বিষয়ে বলি। কাকি বলে হ্যাঁ কিছুদিন আগেই তো এইরকম একটা লাশ আমি আমাদের ঘরের পাশে দেখেছিলাম।

 

আমি কাকিকে জিগ্যেস করি, আচ্ছা এটা কি? বা কার লাশ? যে এইভাবে রাতের বেলা আমার সামনে আসে। আমাকে ভয় দেখায়। কাকি বলে সেটা তো জানিনা। তবে লাশ হলেও মনে হয় এতে কোনো আত্না আছে বা অন্য কোনো রহস্য আছে।আমি ভাবতে থাকি রহস্য। লাশের মধ্যে আবার আত্না আসে কিভাবে।আর এটা তো ভয়ানক বেপার।আমি সেখান থেকে চলে আসি।সেদিন রাতে আমি শুয়ে আছি।হঠাৎই আমি বাহিরে কোনোকিছুর আওয়াজ শুনতে পাই।আমি ভয়ে দরজা খুলে বের হবার সাহস পাচ্ছি না। কিছুক্ষণের আমি রুমের বেড়ার সাথে হেলান দিয়ে কাওকে দাড়িয়ে থাকতে দেখলাম। আমি দেখি সেই জিনিসটা আস্তে আস্তে আমার রুমের বেড়া ঘেসে এক পাশ থেকে অন্য পাশে যাচ্ছে।

 

এটা দেখে আমি খুবই ভয় পাই। বাবাকে ডাকতে চেয়েও পারলাম না। দেখি আমার মুখ দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছে না। কোনো কথায় বলতে পারছি না। এক সময় আমি চোখ বন্ধ করে দোয়া দুরুদ পাড়তে থাকি।কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে দেখি সেখানে কিছুই নেই।এরপর কিছুদিন কেটে যায়।চারপাশে ধানের জমি গুলো এখন কৃষকদের ব্যাস্তর মাধ্যম হয়ে উঠেছে।সবাই ধান কেটে ঘরে আনতেই ব্যস্ত।আমি কোনো কাজকাম করি না।পাশের এলাকায় দুইটা টিউশনি পড়াই মাঝেমধ্যে কলেজে যাই। আর নামাজ পরি।

 

সবাই যার যার জমির ধান কেটে বাড়িতে তুলেছে। পরদিন বাইসাইকেল টি নিয়ে যখন পাশের এলাকায় পড়াতে যাই,তখন দেখি একটা বাড়ির মহিলা বলছে, তারা নাকি একটা লাশ দেখেছে। আমি মহিলার কথা শুনে সেখানে থেমে যাই। সেখানে গিয়ে মহিলার কাছে জানতে চাই,আচ্ছা আপনি কোথায় লাশটি দেখেছেন? মহিলা টি বলে,সেদিন এই পরিত্যক্ত খোলা মাঠে আমি কাথা শুকাতে দিয়েছিলাম।তো সেদিন কাথা আনতে আমার মনে ছিল না।তাই সন্ধার পর আমি সেই মাঠে যায় কাথা আনতে যাই।তখনই আমি দেখি কাঁথার ঠিক পাশে একটা লাশ আড়াআড়ি ভাবে শুয়ে আছে।তখন আমি এটা দেখে ভয় পেয়ে যাই।

 

পরক্ষণেই দেখি লাশটা একটু নড়ে উঠলো।আর এটা দেখেই আমি ভয় পেয়ে কাথা রেখে দৌড়ে বাড়ি চলে আসি।মহিলার কথা শেষ হতে না হতে আমি দেখি আরে আমার তো টিউশনির সময় পার হয়ে যাচ্ছে।অনেক দেরি হয়ে গেছে।তাই মহিলার কাছ থেকে সোজা চলে যায় পাশের এলাকায়।যে বাড়িতে টিউশনি পড়াই।সেখানে ছোট ছেলে-মেয়েকে পড়াই।ছোট বাচ্চাদের পড়াতে কি যে কষ্ট তা হয়তো অনেকেই জানেন।আর কতো যে কথা বলতে হয় তা অনেকেরই হয়তো জানা আাছে।তো সেদিন একে তো গিয়েছি দেরি করে,তার উপর পড়াতে পড়াতে অনেক দেরি হয়ে যায়।মাঝখানে একটু বিরতি নিয়ে বাড়ির পাশের মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে আসি।

 

নামাজ শেষ করে আবারো পড়াতে লাগলাম। অনেক রাত হয়ে গেল। মানে বোঝেনই তো গ্রামে আটটা নয়টা অনেক রাত।তো আমি তাদেরকে পড়িয়ে, সাইকেলটি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য রওয়ানা দেই। শীতকাল তো তাই অনেক ঠান্ডা লাগছে। মাফলার দিয়ে কানগুলো ঢেকে সাইকেলে চড়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছি। কিছুদূর যেতেই আমি খেয়াল করি আমার আশেপাশে প্রচন্ড বাতাস বইছে। এমনিতেই তো অনেক ঠান্ডা। তার উপর এমন বাতাস। শীতে আমি কাবু হয়ে যাচ্ছি। অনেক কষ্টে সামনের দিকে এগোচ্ছি। হঠাৎই আমার চোখ যায় রাস্তায় সেই ছোট ব্রিজটার দিকে।

 

আমি ভালোকরে তাকিয়ে দেখি ব্রিজটির উপর একটা লাশ আড়াআড়ি শুয়ানো।এটা দেখে আমার গায়ে কাটা দিয়ে উঠে।এতোদিন লাশ লাশ অনেকের মুখে শুনেছি।লাশ স্বপ্নেও দেখেছি। বাড়ির আশেপাশে লাশ দেখেছি।কিন্তু চলার পথে রাস্তায় এই প্রথম একটি লাশ দেখছি।আমি ভয়ে ভয়ে সমানে এগোচ্ছি। মনের মধ্যে অনেক ভয় কাজ করছে। কি করব! যাব সমনের দিকে! নাকি যাওয়া টা ঠিক হবে। কি করব না করবো,বুজতে পারছি না।লোকমুখে লাশ নিয়ে আমি অনেক কিছু শুনেছি।একদিন এক লোক নাকি তার ভ্ানে করে লাশ নিয়ে যাচ্ছিল, পথিমধ্যে হঠাৎই লাশটি উঠে দাড়ায়।আবার কোথাও শুনেছি রাস্তায় লাশ পথ আটকে দেয়।

 

লাশ থেকে দূরে থাকাটাই ভালো। এগুলো খুবই খারাপ জ্বিনের কাজ। আমি এসব ভাবতে ভাবতে ভয়ে ভয়ে সামনে এগোচ্ছি। একসময় আমি ভাবতে থাকি হয়তো কোনো মানুষের কাজ হবে হয়তো। কারন আমি আসার সময় এই এলাকার একজনকে সাদা কাপড় হাতে নিয়ে এদিক উদিক ঘুরতে দেখেছিলাম। তাহলে কি সেই লোকটাই সাদা কাপড় গায়ের উপরে দিয়ে শুয়ে আছে। মনে হয় এটা সেই লোকটির কাজ। আমি কয়েকবার ডাক দেই। এই তুই আমাকে ভয় দেখানোর জন্য এখানে শুয়ে আছিস নাকি? যদি এই মনমানসিকতা পোষন করে থাকিস। তাহলে তুই ভূল করছিস।কারন আমি এসব লাশ দেখে একদমই ভয় পাই না।লাশটি শুয়ে আছে।সেখান থেকে কোনো আওয়াজ আসছে না।আমি মনে সাহস সঞ্চয় করে সেখানে লাশটির খুব কাছেই চলে যাই। আর তখনই পাশ থেকে আচমকা একটা ঝড়ো হাওয়া এসে লাশের উপর থেকে সাদা কাপড়টি সরিয়ে ফেলে।

 

বাতাসে সাদা কাপড়টি সরে যেতেই আমি দেখি খুবই ভয়ঙ্কর কালো মুখের কিছু একটা ভয়ানক ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।এটা দেখে আমি এতো বেশি ভয় পাই।ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়ে সেখান থেকে সাইকেলে চড়ে আবার সেই বাড়িটিতে যেতে থাকি।বাড়িটির কাছে গিয়ে আমি সাহস করে পেছনে তাকিয়ে দেখি লাশটি এখন আর নেই।আমি আজই সবচেয়ে বেশি ভয় পেয়েছি।ভয়ে ভয়ে ভাবছি কি করা যায় এখন! আর ঠিক তখনই আমার পাশ দিয়ে একটা লোক হেটে হেটে সেদিকে যাচ্ছে। যেখানে কিছুক্ষন একটা লাশ ছিল।

 

Best Bangla Golpo | Vuter Golpo | জাদুর কাঠি

 

আমি লোকটিকে দেখে মনে অনেক সাহস পাই। লোকটির বয়স বৃদ্ধ হবে প্রায়।আমি লোকটিকে চাচা বলে ডাক দেই।লোকটি থামে না।সামনের দিকে সে যেতেই থাকে। ভাবছি হয়তো লোকটি কানে কম শুনে।তাই আমি সাইকেল নিয়ে দ্রুত লোকটির কাছে যাই। লোকটিকে জিগ্যেস করি, চাচা আপনি কোথা থেকে এসেছেন? আর কোথায় যাচ্ছেন? নাহ এইবারো লোকটি আমার সাথে কথা বলে না।সে তার মতো করে সামনের দিকে যাচ্ছে।একসময় আমার কাছে লোকটি কে কিছুটা অস্বাভাবিক মনে হয়।আমি আর সামনের দিকে যেতে সাহস পাইনি।একসময় বৃদ্ধ সেই লোকটি এই কনকনে শীতে র মধ্ে সেই ব্রীজ থেকে ব্রীজের নিচে পানিতে লাফিয়ে পরে।

 

এটা দেখার পর আমি খুবই ভয় পেয়ে যায়।আরে এতো কনকনে ঠান্ডায় একটা বৃদ্ধা লোক কি করে এই রাতের বেলা ঠান্ডা পানিতে লাফ দেয়।আমি দূর থেকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে দেখি। না পানি থেকে এখনো লোকটি উঠে আসেনি। মানে লোকটি এখনো পানির নিচেই ডুবে আছে। আরে এ যদি সত্যিই মানুষ হতো। তাহলে তো এতোক্ষণ পানির নিচে ডুবে থাকতো না। তখন আবারো বাতাস বইছে আর আমি বুজতে পারি আবারো হয়তো খারাপ কিছু ঘঠবে।তাই আমি ভয়ে সেই বাড়ির দিকে যেতে থাকি। বাড়ির ভেতর প্রবেশ করি।

 

আমি দেখি সেই বৃদ্ধ লোকটি সেই বাড়ির ভেতর দাড়িয়ে আছে।এটা দেখে আমি অবাক হই।আরে এইমাত্র লোকটি ব্রিজের ঠান্ডা পানিতে লাফিয়ে পরেছে।তাহলে কি করে সেই লোকটি এখানে আসলো।আমি সুবিধা না পেয়ে সাইকেলে চড়ে সেদিকে যেতে থাকি,যেই মসজিদে আমি সন্ধায় নামাজ পরেছিলাম। মসজিদে গিয়ে দেখি ইমাম সাব নামাজ পরছেন।হয়তো নফল নামাজ বা অন্য কোনো নামাজ পরছেন!আমি কিছুক্ষন অপেক্ষা করলে তিনি নামাজ শেষ করলে আমাকে বলে তুমি এই রাতে এখানে।আমি ইমাম সাবকে সালাম দিয়ে বলি হুজুর আমি তো একটা ভয়ানক বিপদে পরেছি।হুজুর বলে কি বলো তুমি!কি বিপদ বলো তো। আমি হুজুরকে সবকিছু খুলে বলি।সবকিছু জেনে হুজুর বলে এটা একটা খারাপ জ্বিন। জ্বিন টা মানুষদের ভয় দেখিয়ে আনন্দ পায়। মাঝেমধ্যে মানুষকে মেরেও ফেলে।তোমাকে কিছু করতে পারেনি।

 

কারন তুমি আল্লাহর দেওয়া সবকিছু মেনে চলো।নামাজ পড়ো।মিথ্া বলো না। মানে যার মনে ইমান আছে।যার মনে আল্লাহর ভয় আছে। আল্লাহর উপর পূর্ণ বিশ্বাস আছে। তাদেরকে এসব জ্বিন কিছুই করতে পারবে না। মুমিন লোকদের আশেপাশে থেকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু কোনো ক্ষতি করবে না।তুমি নামাজি বলেই আজ সেই জ্বিনের হাত থেকে বাঁচতে পারলে। আর তুমি যে লাশটির কথা বলোছো,সেটি কোনো লাশ নয়।সেই লাশটি একটি খারাপ জ্বিন। আর এই জ্বিনদের রূপধারন করতেও সময় লাগেনা। তারা যেকোনো সময় যেকোনো রূপে মানুষের সামনে আসতে পারে। হোক সে ভালো জ্বিন বা খারাপ জ্বিন।বাবা শোনো কখনোই নামাজ ছারবে না।নামাজ আমাদেরকে সব খারাপ জ্বিনদের থেকে যেভাবে রক্ষা করে,সেইভাবে আমাদের সব বালামুসিবত থেকেও রক্ষা করে।

 

আমি হুজুরের কথা শুনে মনে সাহস পাই।হুজুর বলে যাও বাবা ভয় পেও না।মনে সাহস থাকলে ও খাটি ইমান থাকলে এসব জ্বিনেরা তোমার কিছুই করতে পারবে না। হুজুরের কথা শেষ হলে ,আমি উঠে পরি। হুজুরকে সালাম দিয়ে মসজিদ থেকে বেরিয়ে পরি। সাইকেল নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরি।আমি ভয়ে ভয়ে মনে মনে দোয়া দুরুদ পড়তে পড়তে সেই ব্রিজটি পার হচ্ছি। কিন্তু আমার কিছু হলো না। ব্রিজটি পার হওয়ার সময় ও দেখি লাশটি ব্রিজের পানিতে ভাসছে।আমি ভয়ে আর সেদিকে তাকাইনি।আমি সাইকেল চালিয়ে বাড়িতে এসে পৌছায়। বাড়িতে এসে গোসল করি ও দোয়াদুরূদ পড়তে পড়তে রুমে প্রবেশ করি।পাশের রুমে গিয়ে দেখি পরিবারের সবাই খাবার টেবিলে বসে আছে। আমি পরিবারের সবাইকে ডেকে বলি,মা আজ থেকে তুমি নামাজ পরবা। বাবাকেও নামাজ পরার জন্য বলবা। খাবার খেতে বসা আমার ছোট মিষ্টি বোনটিও বলে উঠে, ভাইয়া আমিও কি কাল থেকে নামাজ পরবো? যার বয়স কেবল চার বছর হলো। আমি মিষ্টি বোনের কথা শোনে বলি ,ওরে আমার গুলুগুলু আপুটা খাও এখন।

 

সমাপ্ত।

 

More Best Bangla Golpo | ভূতের গল্প  | Vuter Golpo

 

**নামাজ মানষকে সকল প্রকার পাপ ও খারাপ কাজ হতে বিরত রাখে। তাই যারা নামাজ না পরি,চলুন আমরা এখন থেকে নামাজ পরার অঙ্গিকার করি**

 

গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে,তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।আপনার একটা কমেন্টই ভৌতিক গল্পকে নতুন গল্প লিখতে উৎসাহীত করবে।আর একটা কথা ,আপনার আশেপাশে পরিচিত যারা ভৌতিক গল্প পড়তে পছন্দ করে।তাদেরকে ভৌতিক গল্পে আমন্ত্রন করে গল্প পড়ার সুযোগ করে দিন।যাতে তারাও গল্পগুলো পড়তে পারে।সবাইকে ভৌতিক গল্পের বেপারে জানান ও ভৌতিক গল্প পড়তে উৎসাহিত করুন।

 

#ভূতের_গল্প #লাশ_আতংক #rp10 #ভূতেরগল্প #highlightseveryone #foryoupageシ #লাশ_আতংক_গল্পের_লিংক #rpambg10 #আনোয়ারহোসেন #ভূতেরভয়ংকরগল্প

#virals #foryou #foryourpage #horrorstory #bhoothfm #bhoot #horror_story #ghost #লাশ_আতংক_ভৌতিক_গল্প #viralposts #লেখকআনোয়ারহোসে #viralpage #viralpost

Leave a Comment

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.