জাদুর কাঠি
শেষ পর্ব
#লেখক_আনোয়ার_হোসেন
Best Bangla Golpo | জাদুর কাঠি | ৩য় পর্ব । Vuter Golpo | ভূতের গল্প
আবারো মিলি স্কুলের পথে হাটতে থাকে। আনোয়ারও অদৃশ্য হয়ে তার সঙ্গ নিয়ে হাটছে। এভাবে মিলি স্কুলে প্রবেশ করে। আর আনোয়ার তার গতিবিদি লক্ষ করতে থাকে। না মিলি নিজের মতো করে থাকতেই পছন্দ করে। আনোয়ার ভাবে আজ স্কুল ছুটি হলে সে স্বাভাবিক অবস্থায় মিলির সাথে হেটে বাড়ি ফিরবে। আজ মিলির শরীরটা ভালো না। তার শুধু পথের সেই বখাটেগুলোর কথাগুলো মনে পরছে। কিন্তু এটা ভেবে সে খুবই অবাক হয়। আনোয়ারের দেওয়া কলমটি হাতে নিতেই সেখানে থাকা সব বখাটেই পালিয়ে যায়। মিলি কলমটি হাতে নিয়ে ভাবে যাক ভালোই হলো। শরীর খারাপ তাই সে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে যাবে। স্কুল থেকে বের হয়ে মিলি বাড়ির পথে পা বাড়ায়। আনোয়ারও অদৃশ্য হয়ে তার সাথে হাটতে থাকে।
কিছুদূর যাবার পর। আনোয়ার থেমে যায়। না আজ সে মিলির সাথে কথা বলেই ছারবে।সে স্বাভাবিক হয়ে পেছন থেকে মিলিকে ডাকে। মিলি থামলে আনোয়ার তার সাথে হাটতে থাকে। একি তুমি এখানে? আনোয়ার জবাব দেয় কেন, আমাকে দেখে তোমার ভালো লাগছে না। মিলি চুপ করে থাকে। কি হলো মিলি আজ তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন? তুমি ঠিক আছো তো। মিলি জবাব দেয় আসলে আজ আমার মনটা ভালো না। তবে আনোয়ার জানো আজ না আমার সাথে একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটে গেছে। বলো কি? ঠিক আছে তুমি বলো কি হয়ে গেল তোমার সাথে। আজ স্কুলে আসার সময় কয়েকটা বখাটে মিলে আমার পথ আটকে দাড়ায়। আমি তাদের কোনোভাবেই থামাতে পারছিলাম না।
তখন সেই বখাটেগুলো আমাকে নিয়ে নানান কটু কথা বলছিল। কেউ আমার উড়না ধরে টানছিল তো কেউ আমার হাত ধরেছিল। আনোয়ার সবকিছু তো আগে থেকেই জানে। তখন তো সে অদৃশ্য ছিল। মিলির মুখে কথাগুলো চুপচাপ শুনেই যাচ্ছে। সে মিলির ঘটনার বিবরন না শুনে তার কথা বলার যে সুন্দর ও মিষ্টি ভঙ্গী সেটাই বারবার খেয়াল করছে। মিলি আরো বলে পরে আমি কোনোকিছু না ভেবে হাতে থাকা কলমটি উঁচু করে তাদের সামনে ধরি। আর অবাক করার বিষয় হলো তখনি বখাটেগুলো দৌড়ে পালালো। আমি তখন থেকে এই বিষয়টা নিয়ে ভাবছি। আসলে এটা কলম তবুও কেন তারা এভাবে ভয় পেল।
Best Bangla Golpo | Bhooter golpo | Horror Story
আনোয়ার বলে এটাই তো ভালো। এখন থেকে কেউ তোমার কোনো ক্ষতি করতে আসলে,তুমি তাকে এটা দিয়ে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে পারবে। আনোয়ার তোমাকে ধন্যবাদ, সেদিন কলমটি তুমি আমাকে দিয়েছিলেন। আনোয়ার মনে মনে ভাবে ধূর ছাই ভেবেছিলাম অন্য কিছু দিবে,এখন তো ধন্যবাদ দিয়েই ক্ষ্যান্ত। আমি তো স্কুলে গিয়েছিলাম, তুমি কোথায় গিয়েছিলে? আনোয়ার বলে মিলি যেখানে থাকবে যাবে,আনোয়ার তো সেখানে যাবেই। দেখো মিলি আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। মিলি চুপচাপ থাকে। আনোয়ার জিগ্যেস করে আজ কি তোমার পড়ার টেবিলের পাশে আসবো? মানে বলতে চাচ্ছি তোমার রুমের জানালার কাছে। মিলি বলে না তুমি একদমই আমার বাড়ি আসবে না। বাড়িতে ভাই আছে। মা বাবা আছে তারা তোমাকে দেখে ফেললে তোমাকে আস্ত ছারবে না। আরে আমি আনোয়ার কি তোমাদের বাপ ভাইকে ভয় পাই নাকি? তারা তো আমারই আপনজন। মিলি বলে এতো সাহস ভালো না। আমি তোমার ভালোর জন্য বলছি। তারা দুজনে হাটতে হাটতে বাড়ির কাছে চলে আসে।
মিলি বলে এখন তুমি যাও আমি গেলাম। সে বাড়ি চলে গেলে আনোয়ার ভাবে সে আজ একটু রিফাতের সাথে দেখা করবে। তাই সে রিফাতের বাড়িতে গিয়ে দেখে রিফাত বাড়িতে নেই। তার মা বলে রিফাত হয়তো আশেপাশেই আছে। তাই আনোয়ার সেখান থেকে চলে আসে। আবারো সে মিলির বাড়ির কাছে চলে আসে। কিন্তু তখনই মিলির ভাই তপনের সাথে দেখা হয়ে যায়। আনোয়ার তপনকে ভালো মন্দ জিগ্যেস করলে,তপন বলে ভালো নাই রে। কদিন যাবত আমাদের বাড়িতে কি সব অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে। কি বলিস তুই? কি হয়েছে একটু খুলে বল তো। তপন বলে আমার মনে হয় আমাদের বাড়িতে খারাপ কোনোকিছুর নজর পরেছে। তা না হলে রাত বিরাতে যা ঘটছে। তা সত্যিই ভয় পাবার মতো। আনোয়ার বলে তুই চিন্তা করিস না আমার পরিচিত একটা কবিরাজ আছে। আমি তাকে চিনি। তুই বললে আজই সে তোদের বাড়ি যাবে। কথা শেষ হতেই তপন কোনো একটা কাজে বাহিরে চলে যায়। তখন আনোয়ার মিলির জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
আজ যেভাবেই হোক মিলির মুখে ভালোবাসার কথা শুনতে চায়। সে জাদু করে একটা গোলাপ সাথে নিয়ে মিলির সামনে গিয়ে দাড়ায়। মিলি আজ তোমাকে একটা সত্যি কথা বলতে হবে। তুমি কি আমাকে সত্যি ই ভামোবাসো? একটু ভেবে বলো। সে চুপ করে আছে। কি হলো তোমার নিরবতার মানে কি বুঝে নেবো! জবাব দিচ্ছো না কেন? গোলপটা মিলির দিকে বাড়িয়ে সে বলতে থাকে মিলি আমি তোমাকে আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। মিলি তার হাত থেকে গোলাপটি নিয়ে পাশে ছুড়ে ফেলে দেয়। আর সাথে সাথে সেই গোলাপটি সেখানেই অদৃশ্য হয়ে যায়। এটা দেখে মিলি অবাক হয়। গোলাপটি অদৃশ্য হয়ে গেল!!
এতে আনোয়ার খুব কষ্ট পায়। দেখো মিলি তুমি গোলাপ ফেলে দিয়েছো সেটা বেপার না। তুমি শুধু মুখে একবার বলো আমাকে ভালোবাসো। মিলি কিছু না বলে চুপ থাকে। আর তখনি সেখানে মিলির বাবা চলে আসে। কিরে মিলি কি হচ্ছে এসব? সে বলে বাবা দেখো এই ছেলেটা আমাকে বিরক্ত করছে। মিলির বাবা রেগে যায়,এই ছেলে তুমি অমুকের ছেলে না? তুমি এখনো নিজেকে শোধরাতে পারোনি। তোমার এখনো শিক্ষা হয়নি। দাড়াও আজ তোমার বাবার কাছে সবকিছু বলছি। মিলিকে তার বাবা হাত ধরে টানতে টানতে বাড়িতে নিয়ে যায়।
আনোয়ার সেখানে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকে। এই মিলিটা কেমন যেন। মুখ ফুটে একবারও ভালোবাসার কথা বললো না। তার কি একটা মন নেই। আর থাকলে সেখানে আমাকে একটু জায়গা দিতে পারবে না। সে কেন আমার সাথে এরকম করছে। আনোয়ার তো চাইলেই জাদু করে মুহূর্তের মধ্েই মিলিকে তার করে নিতে পারে। কিন্তু সে তো এটা চায় না। সে সবসময়ই চেয়েছে মিলি তাকে মন থেকে ভালোবাসুক। আনোয়ার সেখান থেকে চলে যায়। সেদিন রাতে মিলি টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে গিয়ে কিছু একটা দেখে প্রচন্ডরকম ভয় পায়। আর তখন থেকেই মিলি কেমন অদ্ভুত সব আচরন করতে থাকে।
যে মেয়েটি সবসময়ই হাসিখুশি থাকে। আজ সে কি দেখে এমন করছে। কে জানে সে কি দেখেছে। খবর পেয়ে আনোয়ার সেখানে যায়। তপন জিগ্যেস করে কিরে তোর কবিরাজ তো এলো না। আনোয়ার বলে চিন্তা করিস না। সময় হলে কবিরাজ ঠিকই চলে আসবে। মিলি ঘরে একটা চেয়ারে বসে আছে। আর তাকে ঘিরে এলাকার অনেক লোকজন ভিড় করে আছে। আনোয়ার মিলিকে জিগ্যেস করে, মিলি তুমি সেখানে কি দেখে ভয় পেয়েছো? মিলি কথা বলে না। আবারো তাকে জিগ্যেস করা হয় মিলি তুমি সেখানে কি দেখেছিলে? মিলি এইবারও কোনো কথা বলে না।
আনোয়ার বিরবির করে কি যেন বলে। আবারও জিগ্েস করে দেখো মিলি আমাকে সত্যি করে বলো সেখানে তুমি কি দেখেছিলেন? মিলি আস্তে করে বলে আমি যখন টিউবওয়েলে পানি আনতে যায়। তখন আমি খেয়াল করি টিউবওয়েলের ভেতর কিছু একটা দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছিল এক গোছা লম্বা চুল টিউবওয়েলের ভেতর পরে আছে। এটা দেখে আমি চুলগুলো টিউবওয়েল থেকে বের করার চেষ্টা করি। আর তখনি কে যেন আমার চুল ধরে প্রচন্ডভাবে টানতে থাকে। আর আমি পেছন ফিরে তাকালে দেখি সেখানে কেউই নেই আর টিউবওয়েলের ভেতরের চুলগুলো নেই। আমি কিছু বুঝতে পারছিলাম না। আমার সাথে কি হচ্ছে এসব্!
তারপর কি হয়েছে মিলি? তারপর কি দেখেছো? তারপর ,,,! তারপর,,,,বলেই মিলি ঘরের জানালা দিয়ে চোখ বড় করে বাহিরে তাকায়। সেদিকে তাকাতেই সেখানে থাকা সবাই ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে যায়। সেখানে বিরাট আকারের ভয়ঙ্কর একটি ছায়া দেখা যাচ্ছে। বিরাট আকারের সেই ছায়াটা আস্তে আস্তে বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। মানে সবার সামনে সেটা দেখতে দেখতে একটা ভয়ানক অবয়বে পরিনত হয়। আর এটা দেখতে এতোটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে কেউ দ্বিতীয় বার সেটার দেখার সাহস পাইনি। ততক্ষণে সবাই এদিক সেদিক ছোটাছোটি করতে থাকে। তপন ঘরে রাখা দা হাতে নিয়ে সেই ভয়ঙ্কর অবয়বটির দিকে তেড়ে যায়। আনোয়ার তপনকে সেখানে যেতে নিষেধ করলেও সে থামেনি। সে দা উঁচু করে সেখানে যায় ঠিকই। কিন্তু অবাক করা বেপার হলো, তপন সেই অবয়টির কাছে গিয়ে নিজেই নিজের গ-লা-য় সেই দা চালিয়ে দেয়। আর সাথে সবার চোখের সামনে মিলির ভাই তপন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। মিলির পরিবারের সবাই সেখানে ছুটে যায়। ততক্ষনেসেই ভয়ানক অবয়বটি অদৃশ্য হয়ে যায়।
আনোয়ার তপনের কাছে ছুটে যায়। একসময়ের সবচেয়ে কাছের বন্ধু তপনকে তার চোখের সামনে মরতে দেখে তার খুবই কষ্ট হচ্ছে। শয়তান তোকে আমি ছারবো না। আমাকে তুই চিনিস না। এই বলে আনোয়ার আশেপাশে সমানে জাদু করে কিছু একটা করতে থাকে।একিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়না। তপনকে তার বাবা মা জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করতে থাকে। এটা দেখে আনোয়ারও ইমোশনাল হয়ে যায়। তার দুচোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পরতে থাকে। অন্যদিকে মিলি চেয়ারে বসে আছে। সবাই কান্না করছে কিন্তু মিলি সেখানে সজোড়ে হাসতে থাকে।
আনোয়ার মিলির কাছে ছুটে আসে। মিলি তুমি ঠিক আছো তো? মিলি জোড় গলায় বলতে থাকে। হ্যাঁ আমি একদম ঠিক আছি। আমি অনেক খুশি। আনোয়ার জিগ্যেস করে তুমি হাসছো কেন? হাসবো না তো আমি কান্না করবো। আনোয়ার মিলিকে ধরতে গেলেই সে অদ্ভুত আচরন করতে থাকে। সে বলতে থাকে সাবধান আমার কাছে আসবে না বলছি। আমার কাছে আসবি না বললাম। একি মিলি তুমি এমন করছো কেন? আমাকে ছুয়ে দেখবি তো দূরে থাক আমার কাছে আসার চিন্তাও মাথায় আনবি না। মিলির এরূপ আচরন দেখে তার আর বোঝার বাকি নেই,মিলিকে এখন কোনো খারাপ অশুভ শক্তি ভর করে আছে।
Best Bangla Golpo | Vuter Golpo | জাদুর কাঠি
তখন আনোয়ার বলতে থাকে দেখ শয়তান,তুই যে মিলি নয় সেটা আমি বুঝে গেছি। সময় থাকতে এখনো এখান থেকে পালা বলছি। মিলি সজোড়ে হাসতে থাকে। আমিও তো তাই চাই। আমি এখান থেকে চলেই যাচ্ছি বলেই মিলি সবার সামনে শূন্যে ভাসতে থাকে। আর তখনকার পরিবেশটা খুবই ভয়ানক হয়ে উঠে। আমি যাচ্ছি এইবার। তখনি সেখানে কবিরাজের আগমন ঘটে। কবিরাজ চিৎকার করে থাকে,আরে কে আছো মেয়েটাকে ধরো। মেয়েটাকে না ধরলে বিপদ হয়ে যাবে। কবিরাজের মুখে এসব কথা শুনে আনোয়ার দৌড়ে গিয়ে মিলির দুই পায়ে শক্ত করে ধরে। কিন্তু তারপরও মিলি আনোয়ারকে সহ শূন্যে ভাসতে ভাসতে ঘর থেকে বাহিরে বের হয়ে যায়।
মিলির শক্তির সাথে আনোয়ার পেরে উঠছে না। সে তখন তার জাদুর কাঠি দিয়ে জাদু করে মিলিকে নিচে নামাতে চাইলে কোনো লাভই হয়না। কবিরাজ সবাইকে বলতে থাকে,আপনারা দাড়িয়ে কি তামাশা দেখছেন। যান তারাতারি আনোয়ারকে ধরেন। সবাই দৌড়ে গিয়ে আনোয়ারের হাতে শক্ত করে ধরে রাখে। কবিরাজ তখন তার কাজ শুরু করে দেয়। সে সমানে তন্ত্র মন্ত্র পড়তে থাকে। কবিরাজ এক গ্লাস পানি নিয়ে সেখানে গিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকে শয়তান তুই মেয়েটাকে ছেড়ে দে। নয়লে তোকে এই পানি দিয়ে বর্ষ করে দেবো। মিলি অদ্ভুত গলায় বলতে থাকে হাহাহাহা আমি মিলিকে ছেড়ে দিচ্ছি তাহলে। এই কথা বলার পরই মিলি মাটিতে পরে যায়। আনোয়ার দ্রুত গিয়ে কোনোরকমে মিলিকে ধরে ফেলে। আর সাথে সাথেই কবিরাজ বলতে থাকে হাহাহাহা এবার তোরা সবাই মরবি।
কবিরাজের মুখে এসব কথা শুনে আনোয়ার খুবই অবাক হয়। একি আপনার কি হয়ে গেল! আপনি এমন করছেন কেন? কবিরাজ মশাই ভয়ানকভাবে আনোয়ারের দিকে তেড়ে আসতে থাকে। আনোয়ার তার জাদুর কাঠি দিয়ে তাকে থামানোর চেষ্ঠা করে। কিন্তু তারপরেও সে ঠিক থাকতে পারেনি। আনয়ার পাশেই ছিটতে পরে। সে বলতে থাকে তুই অনেক জ্বালিয়েছিস,এইবার দেখ আমার খেলা। আমি কি করতে পারি দেখ এটা বলেই সে জাদুর কাঠি দিয়ে জাদুর মাধ্ মে সজোরে কবিরাজকে আঘাত করে আর সাথে সাথে কবিরাজ মাটিতে লুটিয়ে পরে। আর ঠিক তখনই পাশে থাকা মিলি আবারো হাসতে থাকে। একি হয়ে গেল। আনোয়ার নিজ হাতে কবিরাজকে মে*রে ফেললো।
মিলি বলতে থাকে এখন তুইও মরবি। তোরা সবাই মরবি হাাহাহাহা। আনোয়ার কিছুই বুঝতে পারছে না, এখন সে কি করবে! সেখানে থাকা লোকজন আনোয়ারের মধ্যে এমন পাওয়ার দেখে অবাক হয়। আরে একটা অদৃশ্য অশুভ শয়তানের সাথে লড়াই করা একটা মানুষের পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়। সবাই দোয়া দুরুদ পড়তে থাকে। আনোয়ার জিজ্ঞেস করে শয়তান তুই কি চাস? মিলির শরীর ছেড়ে দে বলছি। যতোক্ষন না অশুভ শয়তানটি মিলির শরীর ছেড়ে যাবে ততক্ষণ সে কিছুই করতে পারবে না। এইমাত্র সে কবিরাজকে মে*রে ফেলেছে।
শয়তান তুই কি চাস? তখনই মিলি হাসতে হাসতে বলতে থাকে আমার যা দরকার তা আমি পেয়ে গেছি। আনোয়ার অবাক হয়ে ভাবে মানে? শয়তানটা বলতে থাকে আমি অনেকদিন যাবত একটা সুন্দরী রমনীর আশায় অপেক্ষায় ছিলাম। এই মেয়েটির সৌন্দর্য আমাকে এতোটাই আকর্ষণ করেছে যে আমি এই এলাকা ছেড়ে কোথাও যেতে পারিনি। অনেক এলাকায় আমার বিরাজ। কিন্তু এই মেয়েটির মতো সুন্দরী মেয়ে কোথাও দেখিনি।
একদিন আমি এই বাড়ির উপর দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন এর মাথার লম্বা চুল দেখে আমি একে ভর করি। এতো সুন্দর চুল এর,এর থেকে দূরে থাকতে পারিনি। আমরা চুল দেখেই কোনো মেয়েকে পছন্দ করি। তবে এই মেয়েটার চুল যেমন সুন্দর, তার দৈহিক সৌন্দর্যটাও কম নয়। এখন এই মেয়েটিকে আমি পেয়ে গেছি। আমি মেয়েটিকে আমার পরিবারের সদস্য করতে চাই। বলেই সে হাসতে থাকে। আমাকে কেউ আটাকাতে পারবে না। দেখেছিস তো ইতিমধ্যেই দুটো লাশ পরে আছে। তুইও কি এদের মতো লাশ হতে চাস নাকি?
আনোয়ার বলে পারলে চেষ্টা করে দেখতে পারিস,শয়তান তুই যতোই শক্তিশালী হয়ে থাক না কেন, আমার ভালোবাসার শক্তি তোকে শেষ করবেই করবে। মিলি হাসতে হাসতে বলে ঠিক আছে তুই পারলে কিছু কর। এই বলে মিলি শূন্যে ভাসতে ভাসতে পাশের জঙ্গলের দিকে যেতে থাকে। এটা দেখে মিলির মা বাবা আনোয়ারকে বলতে থাকে বাবা আমাদের মেয়েকে যেভাবেই হোক বাঁচাও। আমাদের ছেলেটা মরে গেল। এখন মেয়েটাকে বাঁচাও। বলেই তারা কান্নাকাটি করতে থাকে। আন্টি আপনারা দোয়া দুরুদ পড়তে থাকুন। আমি আসছি বলেই সে বিরবির করে কি যেন পাঠ করে সবার সামনেই অলৌকিক ভাবে শূন্যে ভাসতে থাকে।
তার এই শক্তির বেপারে কেউই জানে না। আনোয়ার তার জাদুর কাঠি হাতে নিয়ে মিলির দিকে যেতে থাকে। আর মিলির একটা হাত ধরে ফেলে। মিলি বলে তোকে ভালোভাবে বলছি। কিন্তু তুই শুনিসনি। এখন দেখ আমি কি করি। ততক্ষনে আনোয়ার জাদু করে একটা সুরক্ষা কবজ বানিয়ে রাখে যাতে শয়তানটা মিলিকে নিয়ে কোথাও যেতে না পারে। সে ভাবে যতোক্ষন এই শয়তানটা মিলিকে ভর করে রাখবে,ততক্ষণ সে ভয়ানক অশুভ শয়তানকে কিছুই করতে পারবে না। তাই সে একটা বুদ্ধি করে। যেহেতু মিলিকে সে ভর করেছে তাই মিলি তার তার ইচ্ছেমতো আচরন করছে। যদি মিলি অজ্ঞান থাকে,তাহলে তো সে শয়তানটা শরীরে থাকতে পারবে না। আনোয়ার দ্রুত জাদু করে মিলিকে অজ্ঞান করে দেয়,আর অচেতন হবার সাথে সাথে এইবারও মিলি মাটিতে পরতে থাকে। আনোয়ার এইবারও মিলিকে ধরে কোনোরকমে তার প্রান বাঁচায়।
Best Bangla Golpo | Vuter Golpo | জাদুর কাঠি
সে বলতে থাকে এইবার তুই কি করবি?সেই ভয়ানক অবয়টি বলতে থাকে,আরে তুই তো সামান্য একটা মানুষ জাতি। তুই আমার কি করতে পারবি! এটা শুনে আনোয়ার খুবই রেগে যায়, সে বলতে থাকে এটা তুই ভূল বললি। কেননা মানুষই হলো সৃষ্টির শেষ্ঠ জীব। তাহলে দেখ এই মানুষের কতো ক্ষমতা বলেই সে জাদুর কাঠির সাহায্যে সে ভয়ানক অবয়বটিকে আঘাত করতে যায়। কিন্তু বারবার সেই অশুভ শয়তানটা অদৃশ্য হয়ে যায়। তাই আনোয়ার ভয়ঙ্কর সেই শয়তানটিকে কিছুই করতে পারে না। এভাবে কিছুটা সময় তাদের লড়াই চলে। কিন্তু আনেয়ার কোনোভাবেই সেই অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ভয়ঙ্কর শক্তির সাথে পেরে উঠছে না। তখনই তার মাথায় বুদ্ধি আসে। সে ভাবে শয়তানটা বার-বার অদৃশ্য হয়ে যাওয়াতে সে কিছুই করতে পারছে না। তবে সে নিজেও যদি অদৃশ্য হয় তাহলে তো সেই শক্তি লুকাতে পারবে না। সেও তো অদৃশ্য হতে পারে। আনোয়ার সাথে সাথে অদৃশ্য হয়ে যায়। সেখানে থাকা লোকজন আনোয়ারের এরকম অবস্থা দেখে অবাক হয়ে যায়।
অদৃশ্য হয়ে আনোয়ার সেই শয়তানটির সাথে কি করছে তা কেউ দেখতে পায় না। সবাই মনে মনে দোয়া পড়ছে। কিছুক্ষণ পর সেখানে ঝড়ো হাওয়া বয়তে থাকে। আশেপাশের গাছগুলো অস্বাভাবিকভাবে নড়তে থাকে। মনে হচ্ছে কোনো অদৃশ্য শক্তি গাছগুলোর সাথে তান্ডবলীলা চালাচ্ছে। সেখানে একটা বাজ পরার আওয়াজ হয়। আর সাথে সাথে সেখানে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়। মিলি তখনো মাটিতে পরে আছে। সবাই সেখানে দৌড়ে যায়।
মিলি চোখ মেলে তাকায়, সে দেখতে পায় সেখানে অনেক লোকের ভিড়। সে জিগ্যেস করে এখানে কি হয়েছে? আমার কি হয়েছে আমি এখানে কেন? তার মা জিজ্ঞেস করে মা তুই ঠিক আছিস তো? মিলি বলে হ্যাঁ মা আমি ঠিক আছি। তখনই সেখানে আনোয়ারকে দেখা যায়। সে মাটিতে অচেতন অবস্থায় পরে আছে। সবাই দৌড়ে তার কাছে যায়। এখনো তার প্রান আছে। জলদি কেউ পানি নিয়ে আসো। তার কপালে পানির ছিটা দিতেই সে চোখ মেলে তাকায়। আর বলতে থাকে মিলি কোথায়? মিলি তুমি ঠিক আছো তো? ততক্ষণে মিলিও সেখানে আসে। মিলি জিগ্যেস করে,কি হয়েছে ওর?
কেউ বলতে চাইলে আনোয়ার বলে থামো। আমার কিছু হয়নি। শুধু মাথাটা একটু ঘুরাচ্ছিল। সবাই তাকে ধরাধরি করে উঠায়। সবাই মিলি ও আনোয়ারকে নিয়ে ঘরের দিকে হাটতে থাকে। আনোয়ার পাশে তাকিয়ে দেখে তার সেই জাদুর লাঠিটি মাটিতে পরে আছে। সে আস্তে করে লাঠির কাছে গিয়ে লাঠিটি হাতে তুলে নেয়। সে জানে আজ আল্লাহ তার জাদুর লাঠির উসিলাতে মিলিকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। মিলির সাথে যা ঘঠেছে। তাতে মিলি আবারো অজ্ঞান হয়ে যায়। আনোয়ার দৌড়ে যায়। আর জাদুর লাঠি হাতে নিয়ে সবার সামনে বিরবির কি যেন বলতে থাকে। কিন্তু মিলি ঠিক হয় না। কিছুক্ষণ এভাবে চেষ্টা করার পরও কোনো লাভ হয়নি। অনেক চেষ্টার পর আনোয়ার সেই অশুভ শক্তিকে হারাতে সক্ষম হয়। তার মানে সেই অশুভ শক্তিকে হারাতে সক্ষম হয়। তাকে জাদুর লাঠির সব শক্তি ব্যবহার করতে হয়েছে। তাই এই লাঠিতে এখন কোনো জাদুশক্তি অবশিষ্ট নেই। এটা দেখে আনোয়ার খুবই কষ্ট পায়।
জীবনে সে কাওকে কাছে না পেলেও এই জাদুর কাঠিকে নিজের আপন ভেবে সাথে আগলে রেখেছিল। মিলি সুস্থ হলে তারা বাড়ি ফিরে যায়। কিছুদিন পর মিলি স্কুলে যাচ্ছিল, পথিমধ্যে আনোয়ারের সাথে দেখা। আরে মিলি এখন তুমি কেমন আছো? তোমার শরীরটা ভালো আছে তো? মিলি জবাইে বলে হ্যাঁ ভালো আছি। তুমি এখানে কি করছো? আনোয়ার বলে এই তো তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। যাক দেখাও হয়ে গেল। আচ্ছা মিলি তোমার হাতে এটা সেই কলমটা না? যেই কলমটা আমি কিছুদিন আগে তোমাকে দিয়েছিলাম,,,,। মিলি বলে হ্যাঁ ইদানিং তোমার এই কলমটা জাদুর মতো কাজ করছে। আমার সব মনোবাসনা এই কলমটা পূরন করে দেয়। মানে আমি যা চাই!
Best Bangla Golpo | Vuter Golpo | জাদুর কাঠি
আনোয়ার অবাক হয়ে ভাবে জাদুর কাঠিতে জাদুশক্তি না থাকলেও কলমটিতে এখনো জাদুশক্তি আছে। তারা দুজনে হাটতে হাটতে কথা বলতে থাকে।
(পাঁচ বছর পর)
মিলি বলছে এই শোনো তুলিকে একটু কোলে নাও তো। ও বাপের কোলে চড়ার জন্য সেই কখন থেকে কান্না করছে। আনোয়ার তার মেয়ে তুলিকে কোলে নিয়ে কান্না থামানোর চেষ্ঠা করে। কিন্তু তুলির কান্না যেন কিছুতেই থামছে না। আনোয়ার তখন শোকেসে সাজিয়ে রাখা একটা কাঠি দেখিয়ে বলে মা কেঁধো না। ভালো মেয়েরা কখনো কান্না করে না। এটা বলতেই তুলির কান্না থেমে যায়।
সমাপ্ত।
গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে,তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আপনার একটা কমেন্টই ভৌতিক গল্পকে নতুন গল্প লিখতে উৎসাহীত করবে।আর একটা কথা ,আপনার আশেপাশে পরিচিত যারা ভৌতিক গল্প পড়তে পছন্দ করে। তাদেরকে ভৌতিক গল্পে আমন্ত্রন করে গল্প পড়ার সুযোগ করে দিন। যাতে তারাও গল্পগুলো পড়তে পারে।সবাইকে ভৌতিক গল্পের বেপারে জানান ও ভৌতিক গল্প পড়তে উৎসাহিত করুন।
#ভূতের_গল্প #জাদুর_কাঠি #ভূতেরগল্প #highlightseveryone #foryoupageシ #জাদুর_কাঠি_লিংক #rpambg12 #আনোয়ারহোসেন #ভূতেরভয়ংকরগল্প
#virals #foryou #foryourpage #horrorstory #bhoothfm #bhoot #horror_story #ghost #জাদুর_কাঠি_ভৌতিক_গল্প #viralposts #লেখকআনোয়ারহোসে #viralpage #viralpost